দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পদ্মা বহুমুখী সেতুতে এবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল চালু হলো। ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টা ১৭ মিনিটে পৌঁছেছে পরীক্ষামূলক এই বিশেষ ট্রেন। ৮২ কিলোমিটারের এ দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে ট্রেনটির সময় লাগেছে মাত্র ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুর হতে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। তারপর ১১টা ২৬ মিনিটে পদ্মা সেতুতে ওঠে ট্রেনটি এবং ১১টা ৩৩ মিনিটের সময় ৬.১৫ কিলোমিটার সেতু পার হয় এই ট্রেনটি।
এই বিশেষ ট্রেন যাত্রা শুরুর পূর্বে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এই রেললাইন উদ্বোধনের ফলে দক্ষিণ অঞ্চলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে। এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা আরও সহজ হবে, এর সুফল পাবেন সারাদেশের মানুষ।
পরীক্ষামূলক এই ট্রেন যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি লোকোমাস্টার হিসেবে ছিলেন এনামুল হক ও সহকারী লোকোমাস্টার হিসেবে এম এ হোসেন ট্রেন চালান। গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করেছেন আনোয়ার হোসেন।
ট্রেনটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছানোর পর উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে ট্রেনটিকে স্বাগত জানান।
এদিকে জানা যায়, প্রতিটি স্টেশনেই থাকবে এটিএম বুথ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে বিশেষ র্যাম্প। ৮২ কিলোমিটার রেলপথের ২৩ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার অংশই ভায়াডাক্টের ওপর। ভায়াডাক্ট এবং পদ্মা সেতুর ওপর পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের জুন মাসে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে চলবে প্রতিদিন ১৩ জোড়া, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে ৭ জোড়া এবং কাশিয়ানী-যশোর অংশে ৫ জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। এই সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে অন্তত ১৭ লাখ এবং কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালে যখন প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়েছিলো, তখন এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org