দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণত ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে শুধু নিয়ম মেনে খেয়ে থাকেন। তবে শুধু নিয়ম করে খেলেই হবে না সেইসঙ্গে করতে হবে শরীরচর্চা। তবে ইউরিক অ্যাসিডের রোগীরা কোন শরীরচর্চাগুলো করলে বেশি সুফল পাবেন তা জেনে নিন।
ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসের মতো ইউরিক অ্যাসিডও স্বাভাবিকভাবেই জীবনযাপন কিছুটা স্তব্ধ করে দেয়। মূত্রের মধ্যে থাকা বিভিন্ন যৌগের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিডও হলো একটি। কার শরীরে কতোটা পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড থাকবে, সেটি নির্ভর করে সেই ব্যক্তির খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ ও বিপাকহার তার কেমন, তার উপরে। চিকিৎসকদের মতে, রক্তে এই অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে না পারলে ভবিষ্যতে নানা ধরনের রোগ জাঁকিয়ে বসতে পারে। ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে ঝুঁকি আরও দ্বিগুণ হবে। তাই সুস্থ থাকতে খাওয়া-দাওয়ায় রাশ টানতে হবে। তবে শুধু নিয়ম করে খেলেই হবে না। সেইসঙ্গে করতে হবে কিছু শরীরচর্চাও।
পশ্চিমোত্তাসন
প্রথমে সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসুন। এবার পায়ের পাতার অভিমুখ রাখুন আপনার দিকে। এখন শিরদাঁড়া সোজা রাখুন। এবার শ্বাস নিন। তারপর দুটো হাত একসঙ্গে মাথার উপর সোজা করে তুলুন। এরপর শ্বাস ছাড়ুন। এখন আস্তে আস্তে সামনের দিকে ঝুঁকুন। হাত দু’টো গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছালে একটির কব্জি দিয়ে আর একটিকে ধরে রাখুন। এবার মাথা রাখুন হাঁটুতে। তারপর শ্বাস ছাড়ুন। খেয়াল রাখুন শিরদাঁড়া যেনো সামনের দিকে প্রসারিত থাকে। এখন শ্বাস নিন। এরপর আস্তে আস্তে হাত দু’টি সরিয়ে মাথার উপর নিয়ে গিয়ে শ্বাস ছাড়তে থাকুন। এখন হাত দু’টো নামিয়ে নিয়ে পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে আসুন। মানসিক উদ্বেগ কমাবে এই ব্যায়ামটি।
ভুজঙ্গাসন
প্রথমেই উপুড় হয়ে ম্যাটের উপর শুয়ে পড়ুন। দুই হাত ভাঁজ করে বুকের দুইপাশে রাখুন। এখন শ্বাস নিতে নিতে মাথা ও বুক মাটি থেকে উপরের দিকে তোলার চেষ্টা করুন। মাথা ও ঘাড়ও যতোটা সম্ভব পিছন দিকে হেলিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখবেন যেনো, কোমরের নীচ থেকে বাকি অংশ যেনো মাটি স্পর্শ করে থাকে। এই অবস্থায় থাকুন অন্তত ১০ সেকেন্ড। এরপর আবার আগের ভঙ্গিতেই ফিরে আসুন।
অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন
দুইপা সামনের দিকে ছড়িয়ে বসুন। প্রথমে একটি পা, অপর একটি পায়ের উপর তুলে সোজা করে রাখুন। তারপর যে পা রেখেছেন তার ঠিক উল্টো দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে রাখুন। একটি হাতে আপনার সামনের পায়ের পাতা স্পর্শ করে থাকবেন। অন্য হাতটি ঘুরিয়ে রাখবেন কোমরের উপরে। কিছুক্ষণ এই ভঙ্গিতে থাকার পরই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org