দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নানা কারণে নিয়মিত শরীরচর্চা করা হয়ে ওঠে না বলে প্রতিদিন এক-দু’বার করে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে বলেন চিকিৎসকরা। তবে এই সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে যদি হাঁটু, কোমরে ব্যথা হয়, তাহলে রয়েছে কয়েকটি ব্যায়াম। এতেও উপকার পাবেন।
অফিসে কিংবা বাড়িতে লিফ্ট চড়ে এমন অভ্যাস হয়েছে যে, সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হবে ভাবলেই যেনো ভয়ে পা কাঁপে। মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোতে গেলেও ‘এস্কেলেটর’বা লিফটে উঠে পড়েন অনেকেই। তবে এক দিন কোনও কারণে যদি লিফ্ট বিকল হয়ে যায়, তাহলেই আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়। নিয়মিত শরীরচর্চা করা হয় না বলে প্রতিদিন এক-দু’বার করে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে বলে থাকেন চিকিৎসকরা। আসলে মসৃণ রাস্তায় হাঁটতে অসুবিধাই হয় না। তবে যতো কম সিঁড়িই হোক না কেনো, উঠতে গেলেই হাঁটু, কোমর চড়চড় করে ওঠে। তবে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করলে সিঁড়িতে ওঠাও সহজ হবে।
চেয়ারের সাহায্যে স্কোয়াট্স
পা ও কোমরের পেশি মজবুত করতে এটি হলো সবচেয়ে সহজ একটি পন্থা। সাধারণ স্কোয়াট করার মতো অভ্যাস করতে হবে এই ব্যায়ামে। শুধুমাত্র সামনে রাখতে হবে একটি চেয়ার। এবার দু’পায়ের মধ্যে এক ফুটের ব্যবধান রেখে দাঁড়ানতে হবে। হাঁটু ভাঁজ করে অর্ধেকটা বসতে চেষ্টা করুন। প্রতিদিন ২ হতে ৩ সেট করুন। চেষ্টা করবেন যাতে করে চেয়ারে বসতে না হয়।
সাইড লেগ লিফ্ট
প্রথমেই চেয়ারের মাথা ধরে দাঁড়ান। দুই পায়ের মাঝে সামান্য দূরত্বও রাখুন। এখন যতোটা সম্ভব আড়াআড়িভাবে বাঁ পা শরীর হতে দূরে নিয়ে যান। আবারও আগের অবস্থানে ফিরে আসুন। একইভাবে অন্য পা-কেও আড়াআড়িভাবে নিয়ে যেতে হবে। এভাবে প্রতিদিন ২ হতে ৩ সেট করুন।
চেয়ার প্লাঙ্ক
খুব সাধারণ প্লাঙ্ক কিংবা পালকাসন করতে হবে। তবে চেয়ারের সাহায্যে করতে হবে। প্রথমেই চেয়ারে বসার জায়গায় হাতে ভর দিয়ে দাঁড়ান। হাঁত ভাঁজ করে কনুইয়ের উপর গোটা দেহের ভরও রাখতে পারেন। এখন পুরো দেহ টান টান করে পা ছড়িয়ে দিন যতোটা সম্ভব।
ওয়াল সিট
এবার দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ান। তারপর দুই হাত সামনের দিকে প্রসারিত করুন। এখন স্কোয়াট্স করার ভঙ্গিতে পা ভাঁজ করে অর্ধেকটা উঠে বসতে চেষ্টা করুন। এই ভঙ্গিতে প্রথমে অনেকক্ষণ থাকতে পারবেন না। ধীরে ধীরে আপনাকে সময় বাড়াতে হবে।
স্টেপ-আপ
খুব উঁচু নয় পায়ের সামনে এমন একটি টুল রাখুন। এখন বাঁ পা টুলের উপর রেখে উঠে দাঁড়ান। আবার নেমে দাঁড়ানতে হবে। একইভাবে ডান পা দিয়ে টুলের উপর উঠুন। আবারও নেমে দাঁড়ান। এইভাবে ৫ হতে ১০ বার অভ্যাস করুন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে করে পায়ের চাপে টুল যেনো পিছলে না পড়েন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org