দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নানা কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে দিন শেষে শরীর আর যায় না, ক্লান্ত লাগে। আর বেশির ভাগ দিনই জিমে গিয়ে বসে থাকতে হয়। হাঁপিয়ে যেতে হয়। দেহের বল ফিরে পাবেন কোন ব্যায়ামে?
আসলে এক সঙ্গে সব ধরনের ব্যায়াম প্রতিদিনই করতে পারেন না। ধরে ধরে সবকটা ভঙ্গি অভ্যাস করতে গেলে অফিসে অবধারিত লেট হবেই। তাই সকালে হালকা কিছু ব্যায়াম করে বিকেলের জন্য কঠিন ভঙ্গিগুলো রেখে দেন। নানা কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে দিন শেষে শরীর আর যায় না, ক্লান্ত লাগে। বেশির ভাগ দিনই জিমে গিয়ে বসে থাকতে হয় আপনাকে। তবে প্রশিক্ষকরা বলছেন এমন কিছু ব্যায়াম রয়েছে, যেগুলো অভ্যাস করলে ক্লান্ত শরীরও যেনো চনমনে হয়ে উঠতে পারে।
বেঞ্চ প্রেস
কাঁধ, বুক ও ট্রাইসেপসের গঠন এবং পেশি মজবুত করার জন্য প্রশিক্ষকরা এই ব্যায়ামটি করার পরামর্শও দিয়ে থাকেন। তবে এই ক্ষেত্রেও দু’হাতে খুব সামান্য ওজন নিয়ে এই ব্যায়ামটি শুরু করা উচিত। পিঠ ও কোমরে যাতে আঘাত না লাগে, সেজন্য সরু বেঞ্চের উপর শুয়ে অভ্যাস করতে হয় এই ব্যায়ামটি। প্রতিদিন অন্তত ৩ সেট করে ৫ বার অভ্যাস করুন এই ব্যায়ামটি। এই ব্যায়ামের সঙ্গে শরীর অভ্যস্ত হতে শুরু করলে সময় বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
হাই নিজ়
প্রথমেই একটি পা মুড়ে পেটের কাছে তুলে ধরুন। কিছুক্ষণ এই অবস্থায় থাকার পর আবার অন্য পায়ে একইভাবে পা মুড়ে এই ব্যায়ামটির অভ্যাস করুন। অভ্যাস হয়ে গেলে এক মিনিটে ১০ বার পর্যন্ত করতে পারেন।
জাম্পিং জ্যাক্স
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এরপর একই সঙ্গে হাত এবং পা নাড়িয়ে লাফ দিতে থাকুন। হাত দু’টো এতোটাই উপরে তুলুন, যাতে করে মাথার উপরে এসে পৌঁছায়। পা প্রসারিত করার সময় হাত থাকবে উপরের দিকে, পা জোড়া করার সময় হাত থাকবে নীচের দিকে। জাম্পিং জ্যাক্স-এক জন্য হাতে রাখুন এক মিনিট সময।
পুশ-আপ্স
আসলে পুশ আপ এমন একটি ব্যায়াম, যা সারা শরীরের মাংসপেশিগুলো মজবুত করতেও সাহায্য করে। বিশেষ করে শরীরের কোর মাস্ল। প্রথমেই মাটির দিকে মুখ করে শুয়ে পড়ুন। এরপর হাত ও পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে মাটি থেকে দেহ সমান্তরালভাবে তুলে ধরুন। এখন কনুই ভাঁজ করে এক বার ঠিক মাটির কাছাকাছি, আবার কনুই সোজা করে মাটির থেকে দূরে নিয়ে যেতে হবে। শুরুতে অসুবিধা হলেও, দেওয়ালের সোজাসুজি দাঁড়িয়েও করা যেতে পারে এই ব্যায়ামটি। ৬০ সেকেন্ড থাকুন এই অবস্থাতে।
সাঁতার
গোটা দেহে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলার মোক্ষম অস্ত্রই হলো এই সাঁতার। যে কোনও বয়সে সাঁতারের মতো ব্যায়াম অভ্যাস করা যেতেই পারে। বয়স বাড়লে শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে ব্যথার প্রকোপও তখন বাড়ে। এই সমস্যা নিরাময় করতে পারে এই সাঁতার। শরীর-মন একেবারে চনমনে হয়ে ওঠবে এটি করলে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org