দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো? কেও কেও বলেন, শরীরে ব্যথা ও বেদনা নিরাময়ে এই পদ্ধতি বিশেষভাবে উপকারী। আবার, কারও কারও মতে, এই থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।

হলিউড হতে বলিউড, অভিনেতা থেকে খেলোয়াড়— সকলেই বর্তমানে ‘আইস বাথ’ নিচ্ছেন। সমাজমাধ্যমে প্রিয় তারকাদের এই ‘ট্রেন্ড’-এ গা ভাসাতে দেখার পর অনেকেই বাড়িতে কারও তত্ত্বাবধানে না থেকেই ‘ক্রায়োথেরাপি’তে ডুব দিচ্ছেন। বরফ ও কনকনে ঠাণ্ডা পানিতে অন্তত পক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ডুবে বসে থাকা কিন্তু মুখের কথা নয়। এই থেরাপি কি সব বয়সিদের জন্যেই ভালো? বিষয়টি নিয়ে নানা গবেষণাও হয়েছে। কেও বলছেন, শরীরে ব্যথা-বেদনা নিরাময়ে এই পদ্ধতি বিশেষভাবে উপকারী। আবার, কারও কারও মতে, এই থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তবে, ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড অর্থপেডিক্স’-এর চিকিৎসক এ ব্রায়ন গার্ডনর বলেছেন, “ক্রায়োথেরাপির যে কোনও গুণ নেই- এ কথা হলফ করে বলা যাবে না। কিন্তু, টিস্যু বা পেশির ক্ষত সারাতে ক্রায়োথেরাপি সকলের ক্ষেত্রেই একই রকমভাবে কাজ করে না।”
কনকনে বরফপানিতে গোসল করলে কী কী উপকার হয়?
প্রদাহ নাশ করে
শরীরচর্চা করে হোক কিংবা অন্য যে কোনও কারণেই হোক, দেহে প্রদাহ হলে, সেটি নির্মূল করতে পারে এই কনকনে ঠাণ্ডা পানি।
পেশির ব্যথা কমে
সাধারণত শরীরচর্চা করার পর পেশিতে ব্যথা হওয়াই স্বাভাবিক। পেশির এই ব্যথা নির্মূল করতে পারে বরফগলা পানি।
রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে
বরফগলা পানি দেহে সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে থাকে। রক্ত সঞ্চালন ভালো হলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন পৌঁছে যায় খুব সহজেই।
মানসিক চাপ কমাতে
পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের চাপ সামাল দিতে কী কনকনে পানিতে গোসল উপকারী? এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, এমন ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে এক বিশেষ প্রোটিনের ক্ষরণ আরও বাড়ে। যা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।
ক্ষত নিরাময় করে
সাধারণত শরীরের কোনও জায়গায় আঘাত লাগলে সেখানে রক্ত চলাচল ব্যাহত হতে পারে। বরফগলা পানি সেই ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে থাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org