দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক সময় অধিকাংশ রোগীই পিঠে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা বা হাতের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসছেন। চিকিৎসকদের মতে, এই রোগটি হলো ‘টেক্সট নেক সিনড্রম’। বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার এই সমস্যার মূলে রয়েছে। কীভাবে করবেন এই সমস্যার সমাধান?
সাম্প্রতিক সময় ফোনে কথা বলার তুলনায় ‘টেকস্ট’ বা মেসেজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে চোখ বন্ধ করার পূর্বের মুহূর্ত পর্যন্ত ফোনে মুখ গুঁজে খুটখাট, টুকটাক যেনো চলতেই থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেকেই আবার দিনের বেশ খানিকটা সময় মোবাইলে চোখ রেখে বসে থাকেন। অফিসে কাজের ফাঁকেই হোক বা কলেজে ক্লাসের মাঝেই হোক- একটু মোবাইল না ঘাটলে কী আর চলে? তবে এই অভ্যাস মোটেও ভালো নয়!
দিনের অনেকটা সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে হাতের পেশি এবং লিগামেন্টের উপর চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন এমনটি হতে থাকলে সেই ব্যথা মেরুদণ্ডের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। এমন কি মেরুদণ্ড বেঁকেও যেতে পারে। অনেকেই আবার এই উপসর্গগুলোকে বাতের ব্যথার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার পূর্বে কী কী সতর্কতা নেওয়া দরকার
# মোবাইলে মেসেজের পরিমাণ কমাতে হবে। খুব বেশি প্রয়োজন হলে ফোনে কথা বলুন।
# মোবাইল কেনার সময় লক্ষ রাখবেন মোবাইলটি যেনো খুব ভারি না হয়। কারণ হলো ভারি মোবাইল হাতে থাকলে পেশির উপর বেশি চাপ পড়ে। তাই মোবাইল কেনার পূর্বে মোবাইলের ক্যামেরা, মেমরির, স্টোরেজের পাশাপাশি গ্যাজেটের ওজনের দিকেও আপনাকে নজর রাখতে হবে।
# ইচ্ছে করলে একটি মোবাইল স্ট্যান্ড কিনতে পারেন। তার উপর মোবাইটি রেখে ব্যবহার করলে সমস্যা অনেকটা কমতে পারে।
# ফোন ব্যবহারের সময় ঘাড় নিচু কিংবা বাঁকা করে না তাকিয়ে বরং ঘাড় সোজা রেখে ফোনটা চোখ বরাবর নিয়ে আসতে হবে। এতে করে মাথা এবং ঘাড়ের উপর চাপ বেশ কম পড়বে।
# তবে কয়েকটি ‘ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ়’ও করতে পারেন। সর্বোপরি মেরুদণ্ডের সংলগ্ন পেশি সচল রাখতে নিয়ম করে কিছু যোগাসনও করতে পারেন। এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে শরীরচর্চা না করে কোনো উপায় নেই। যাদের ঘাড়, কোমর কিংবা পিঠে খুব ব্যথা, তারা একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক চিকিৎসা, ফিজিয়োথেরাপি এবং যোগাসন শুরু করুন। সময় মতো চিকিৎসা শুরু না করলে সমস্যা অনেকটা বেড়েও যেতে পারে, তাই সময় থাকতে সাবধান হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org