দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্ষার এই মৌসুমে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি। তার উপর এমন আবহাওয়ায় সর্দিকাশির প্রকোপ দিনকে দিন বাড়ছেই। তাই এই সময় সুস্থ থাকতে কোন খাবারগুলো বেশি করে খাওয়াটা জরুরি?
এই বর্ষার মৌসুমে সারাক্ষণই বৃষ্টিভেজা ঠান্ডা বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে যাওয়ারই কথা। অথচ রাস্তায় বের হলেই দরদর করে ঘাম ঝরছে। ঘেমে একেবারে স্নান হওয়ার মতো অবস্থা। তার মানে যে বৃষ্টি হচ্ছে না- তা কিন্তু নয়। মৌসুমের শর্ত অনুযায়ী মাঝে-মধ্যে আবার ঝেঁপে বৃষ্টিও হচ্ছে। কখনও কখনও বৃষ্টি, আবার কখনও অত্যাধিক গরম— প্রকৃতির দোলাচলে শরীরের উপরও প্রভাব পড়ে সে কারণে। তাছাড়া এই মৌসুমে সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। তার উপর এমন আবহাওয়ায় সর্দিকাশির প্রকোপও বাড়ছে। সুস্থ থাকতে কোন খাবারগুলো বেশি করে খাওয়াটা জরুরি?
সাইট্রাস জাতীয় ফল খান
এই সময় যে কোনও ধরনের সংক্রমণ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হলে এই ধরনের ফল খাওয়াটা জরুরি। লেবু, আঙুর, স্ট্রবেরি হলো সাইট্রাস গোত্রের ফল। এগুলোতে ভিটামিন সি’র পরিমাণও অনেকটা বেশি। যে কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর জুড়ি নেই। রোগবালাই দূরে রাখতে প্রতিদিন একটি করে টক জাতীয় ফল খাওয়াটা জরুরি।
রসুন
রসুনের অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল উপাদানই কোনও রকম ব্যাক্টেরিয়া শরীরে বাসা বাঁধতেই দেয় না। তাছাড়াও, রসুনে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। মৌসুমি রোগবালাইয়ের সঙ্গে রাখতে প্রতিদিন গরম ভাতে একটি করে কাঁচা রসুন খেতেই পারেন। এতেও উপকার পাবেন।
হলুদ
হজমের সমস্যা থেকে গ্যাস- অন্যতম ওষুধ হিসাবে কাজ করে এই হলুদ। হলুদে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা পেটের সংক্রমণের ঝুঁকিও কমায়। রাতে ঘুমোনোর পূর্বে এক গ্লাস দুধে এক চিমটে হলুদ মিশিয়েও খেতে পারেন, তাতেও বেশ উপকার পেতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org