দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আচার আচরণে আদর্শ মানুষ খুঁজে পাওয়া দুরূহ। প্রত্যেক মানুষের কিছু বদভ্যাস থাকে। এই বদভ্যাসগুলো ত্যাগ করা অনেকের জন্য কষ্টকর। অনেক চেষ্টার পরও যারা বদভ্যাস ত্যাগ করতে পারছেন না, তাদের জন্য সহজ কিন্তু কার্যকর চারটি কৌশল নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
ধূমপান, অতিরিক্ত খাদ্যাভ্যাস, নক কামড়ানো অথবা ইন্টারনেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট করার মত অনেক ছোট বড় বদভ্যাস ত্যাগ করা অনেকের জন্য জরুরি। এরজন্য আপনি হয়তো অনেক ভাবে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ফলাফল শূন্য। মনোবিজ্ঞানীদের ধারণা মতে, জোর করে বদভ্যাস বাদ দেওয়ার চেয়ে নিজের মানসিক অবস্থা বুঝে এবং মাথা খাটিয়ে কাজ করাই শ্রেয়। বিভিন্ন মানুষের মনস্তত্ত্ব গবেষণা করে বদভ্যাস ত্যাগ করার চারটি কৌশল পাওয়া গেছে। চলুন জেনে নিই কি সেই কৌশল…
১. চিন্তা করে বের করুন, কেন এবং কখন আপনি এটা করছেন
একঘেয়েমি লাগা নতুবা প্রচণ্ড মানসিক চাপ এর মত বিবিধ কারণেই বিভিন্ন বদভ্যাস হয়। খেয়াল করলে দেখা যাবে, এগুলো নির্দিষ্ট পরিস্থিতি এবং সময়ে ঘটে থাকে। তাই প্রথমত বদভ্যাসের কারণ এবং সময় সম্পর্কে জানতে হবে।
প্রত্যেক বদভ্যাস অবশ্য আপনাকে ভাল কিছু অনুভূতি দিবে। ধূমপান ও মদ্যপান করলে মানসিক চাপ কমে, ইন্টারনেটে সময় কাটালে তা আপনার মনকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখবে। খুঁজে দেখুন আপনার বদভ্যাস আপনার কি উপকারে আসছে।
কোন কোন মানুষের সাথে থাকলে অথবা কোন বিশেষ পরিস্থিতিতি হয়ত আপনার বদভ্যাসকে চালিত করে। এ ব্যাপারগুলো জানলে এগুলো কাটিয়ে উঠার সঠিক প্রক্রিয়া খুঁজে পেতে সহজ হবে। প্রতিটি কারণ বিশ্লেষণ করে তার ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
২. বিকল্প অভ্যাস খুঁজুন
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরনো বাজে অভ্যাস পুরোপুরি বাদ না দিয়ে তুলনামূলকভাবে ভাল অভ্যাস দ্বারা একে প্রতিস্থাপিত করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। কারণ, এতে কম মানসিক শক্তির প্রয়োজন হয়।
আপনার পূর্বের অভ্যাস আপনাকে যে সুবিধা দিত, সেই সুবিধা সম্বোলিত নতুন অভ্যাস গড়ে তুলুন। তবে খেয়াল রাখবেন যাতে খারাপ প্রভাব না থাকে। যদি নিতান্তই খারাপ প্রভাব থাকে, যাতে আগেরটির তুলনায় কম থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি ডায়েট করতে চান, তবে স্ন্যাক বাদ দিয়ে ফল খান। কিছু না খাওয়ার তুলনায় কিছুতো খাওয়া হল। অথবা ধরুন, ধূমপান বাদ দিতে সামান্য স্ন্যাক খান। এটি সিগারেটের তুলনায় অনেক কম ক্ষতিকর।
৩. চিন্তাকে দমিয়ে রাখবেন না
কোন কিছু চিন্তা না করার সিদ্ধান্ত নিলে তা আরো বেশি মনোযোগ কাড়ে। যেমন ধূমপান ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে এটি মন থেকে সরানোর যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, ঘুরেফিরে এই একটি বিষয় মনে ঘুরপাক খায়। তাই জোর করে কোন কিছু চিন্তা না করার সিদ্ধান্ত নেবেন না।
৪. নিয়মিত কাজের ধারা এবং পরিবেশ পরবর্তন করুন
দৈনন্দিন কার্যধারা পরিবর্তন করলে তা বদভ্যাস ত্যাগের সহায়ক হয়। যদি এই পরিবর্তন বদভ্যাস সম্পর্কিত না হয় তাও তা নিয়ামক হবে।
জার্নাল অফ পারসোনালিটি এন্ড সাইকোলজি এর এক গবেষণায় দেখা যায়, একটি নতুন পরিবেশ আগের বদভ্যাস ত্যাগ করে নতুন করে জীবনধারা পরিচালনায় সহায়তা করে।
একটি ক্ষুদ্র পরিবর্তন পারে কোন বদভ্যাস ত্যাগের নিয়ামক হতে। যেমন, টেলিভিশন দেখতে দেখতে বেশি খাওয়া হলে ডায়েট করার জন্য খাওয়ার সময় টেলিভিশন দেখা বন্ধ করে দিন। এভাবে বিচার বিবেচনা করে দৈনন্দিন কাজের কিছু ক্ষেত্র পরিবর্তন করুন।
জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিগত ছয় মাস পরিবর্তিত হতে চেয়েও ৫৪ শতাংশ মানুষ তা পারেনা। মজার তথ্য হল, ব্যর্থ হওয়ার পর সকলের ইচ্ছার দৃড়তা আগের চেয়ে ১০গুণ বেড়ে যায়। তাই হাল ছেড়ে দেবেন না। চেষ্টা চালিয়ে যান। সাফল্য আসবেই।
সূত্রঃ Mindbodygreen