দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টাঙ্গাইলের মধুপুরে ৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন অবগত হওয়ার পর মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ গতকাল রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এলাকাবাসী সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত ১৪ আগস্ট স্থানীয় বাসিন্দারা একটি রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করে। এ কাজে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যে ৯ জনের হাতে ও পায়ে এক ধরনের মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলে গতকাল রবিবার দুপুরে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এই সময় স্থানীয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হযরত আলী উপস্থিত ছিলেন।
অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলো- আম্বাড়িয়া গ্রামের মাসুদ মিয়া (১২) আনোয়ার হোসেন (৩০), আব্দুর রাজ্জাক (২৫), আজাদ মিয়া (২৭), তোঁতা মিয়া (৪৫), আব্দুর রহমান (৫৫), মাহফুজা বেগম (৩০), সালমা বেগম (২৭) ও সাজেদা খাতুন (৪০) ।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হযরত আলী প্রাথমিকভাবে অ্যানথ্রাক্স রোগ হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করে সতর্কাবস্থায় থাকার জন্য এলাকাবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম গঠন করে আক্রান্তদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অ্যানথ্রাক্স রোগ কি ও এ থেকে বাঁচার উপায়
# চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, মানুষ থেকে মানুষে অ্যানথ্রাক্স ছড়ায় না। তবে মানুষের শরীর এবং পোশাক অ্যানথ্রাক্স জীবাণু বহন করতে সক্ষম।
# শরীর হতে জীবাণু দূর করার জন্য অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান দ্বারা গোসল করতে হবে। গোসলের পানি ব্লিচিং অথবা অন্য কোনো অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল দিয়ে শুদ্ধ করতে হবে।
# জীবাণু আক্রান্ত জিনিসপত্র অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট বা তার অধিক সময় ধরে ফুটাতে হবে।
# কোনো জায়গা হতে জীবাণু ধ্বংসে ক্লোরিন ব্লিচ কাযর্করী নয় বরং এক্ষেত্রে ফরমালডিহাইড ব্যবহার করাই ভালো।
# আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় পুড়িয়ে ফেলা জীবাণু ধ্বংসের একটি কাযর্কর পদ্ধতি বলে চিকিৎসকরা মনে করেন।
# মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর যতো দ্রুত সম্ভব অ্যানথ্রাক্স জীবাণুনাশক দিতে হবে। যতো দেরি হবে জীবনের ঝুঁকি ততোই বাড়বে। মানুষের জন্য অ্যানথ্রাক্স ভ্যাক্সিনও রয়েছে।
উল্রেখ্য, অ্যানথ্রাক্স মূলত গবাদিপশুর একটি মারাত্মক সংক্রামক ব্যধি। গবাদিপশু হতেই মূলত এ রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত খাদ্য খেয়ে, যেমন বর্ষাকালে নদী-নালার পানি এবং জলাবদ্ধ জায়গার ঘাস খেয়ে গবাদিপশুও এই অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়।