দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভালোবাসা মানুষের মধ্যে থাকে সেটি স্বাভাবিক। কিন্তু দুই যুবতীর মধ্যে প্রগাঢ় এক ভালোবাসা সকলকেই বিস্মিত করেছে। এই দুই যুবতীর নাম গৌরী ও খাদিজা।
প্রেমের এমন বিরল ঘটনা ঘটেছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কুড়ালতলা গ্রামে। দুই যুবতী সমবয়সী। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় একে অপরের মধ্যে আসা-যাওয়া দীর্ঘদিন ধরে। দু’জনের মধ্যে বান্ধবী সম্পর্ক থাকায় স্বাভাবিক এমনটি ধারণা করেছিল এলাকাবাসী। তবে বিপত্তি ঘটে তখন যখন বিষয়টি ভিন্ন দিকে যায়। তখন বিষয়টি নিয়ে দুটি পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়ে।
এই দুই যুবতী গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এক মুহূর্ত একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকতে রাজি নয় তারা! শত চেষ্টায়ও কোনোভাবেই পৃথক করা যাচ্ছে না তাদের। প্রয়োজনে একসঙ্গে মরবে আবার বাঁচলেও একসঙ্গে বাঁচবে এমনই ভাষ্য এদের।
দুই কিশোরীর প্রেমের বিরল কাহিনী অত্র এলাকায় ব্যাপকভাবে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। একটি মেয়ের প্রেমে আরেকটি মেয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে শুনে ভিড় করছে ওই পরিবারগুলোর বাড়িতে। মেয়েতে মেয়েতে এমন সম্পর্ক হয় নাকি? তাদের মধ্যে এমনই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
এলাকাবাসী ও এ দুই কিশোরীর পরিবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছে, উপজেলার কুড়ালতলা গ্রামের বালক বাড়ৈর কন্যা গৌরী বাড়ৈর সঙ্গে প্রতিবেশী সালাউদ্দিনের কন্যা খাদিজা আক্তারের বান্ধবী সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো তারা। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেয় পরিবারের লোকজনও। তবে ধীরে ধীরে তাদের এ সম্পর্ক এক পর্যায় ভিন্ন রূপ নেয় গভীর প্রেমে।
এক গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। সুযোগ পেলেই দু’জনে বাড়ি হতে উধাও হয়ে যেতো। পরিবারের লোকজন শত চেষ্টায়ও তাদের এমন মনোভাব থেকে ফেরাতে পারছে না। এমন এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে মহাবিপাকে পড়েছে পরিবার দুটি।
গৌরী ও খাদিজার বক্তব্য হলো, তারা সারা জীবন একসঙ্গে বসবাস করতে চায়- এমনটাই দাবি দু’জনের! দুজন দুজনকে ভালোবাসে বলে জানিয়েছে তারা। বাকি জীবনও তারা একসঙ্গে কাটাতে চায়! এমনকি স্বামীর সংসার করতেও রাজি নয় এই দুজন।
গৌরীর পিতা বালক বাড়ৈ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমন মেয়ে যেনো আর কারো না হয়। তার মেয়েকে ফেরানোর জন্য মাসখানেক আগে তাকে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দেওয়া হয়। তবে সে স্বামীর ঘরে না গিয়ে খাদিজার কাছে ঢাকায় গিয়ে ওঠে।
তাকে অনেক কৌশলে সেখান থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হলেও সে আর স্বামীর ঘরে যেতে চাইছে না। অনেক বুঝিয়েও খাদিজার কাছ থেকে তাকে ফেরানো যাচ্ছে না। মেয়েকে নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় রয়েছেন। সুযোগ পেলে আবার সে পালিয়ে যাবে বলে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে হয়।
খাদিজার মা ফাতেমা বেগম জানান, তার মেয়েকে গৌরীর কাছ থেকে পৃথক করার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল তবে ফোনে যোগাযোগ করে গৌরী সেখানে তার কাছে গিয়ে ওঠে। বিষয়টি নিয়ে তাদেরও বহু ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
তাছাড়া দুটি পরিবারের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী হেলানা পারভীন বলেছেন, সাধারণত ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে এটি একেবারেই ভিন্ন বিষয় বলে মনে হচ্ছে। গৌরী আর খাদিজার সম্পর্কটা আসলে কি আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারছি না। তাদের পরিবারও বিষয়টি নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছে।
খাদিজা জানিয়েছে, সে এখন গৌরীকে ছেড়ে থাকতে চেষ্টা করছে। তবে গৌরী কোনোভাবেই তার পিছু ছাড়ছে না।