দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষই আছেন যারা গণিতকে প্রচন্ড ভয় পায়। আসলে গণিতের মার প্যাঁচ কিংবা গাণিতিক সমস্যা সমাধান হচ্ছে মূলত মেধার পরিচায়ক। মস্তিষ্কে মৃদু বৈদ্যুতিক শক গাণিতিক সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ায়- এমনটাই দাবি করছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন মনোবিজ্ঞানী।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণাটি করা হয়। গবেষকরা সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং শেখার হার নিরূপনের জন্য তাদের ২টি গাণিতিক সমস্যার কাজ দেন। কাজগুলো ৫ দিন ব্যাপী সমাধান করতে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের দলটিকে ২টি ভাগে ভাগ করা হয় – একটিতে ২৫ জন এবং অন্যটিতে ২৬ জন। প্রতিদিন গবেষকরা ২৫ জন শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কে Transcranial Random Noise Stimulation (TRNS) নামক উদ্দীপনা প্রয়োগ করেন। গবেষকরা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেন সাধারণ ২৬ জন শিক্ষার্থীদের দলের তুলনায় TRNS প্রয়োগ করা ২৫ জনের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ছে। ২৫ জনের TRNS প্রয়োগ করা দলটি শতকরা ২৭ ভাগ দ্রুত গতিতে গাণিতিক সমস্যা সমাধানের কাজ দুটি সমাধান করতে সক্ষম হন।
অক্সফোর্ড এর এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজিস্ট ড. রয় কোহেন কাদোশ গবেষণাটির নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, “মাত্র ৫ দিনের প্রশিক্ষণ এবং গবেষণায় ব্যথামুক্ত ব্রেইন স্টিমুলেশন এর মাধ্যমে আমরা ব্রেইন-এর ফাংশন এর উন্নতি করতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের ২০ ভাগের মত দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে সহায়তা করা। কিন্তু এর জন্য আমাদের গবেষণার পরিধি বাড়াতে হবে। সাধারণ জনগণের উপর এর প্রভাব, বাস্তুসাংস্থনিক প্রভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। অবশ্যই আরো অনেক কাজ করা বাকী আছে। তবে এটা নতুন সম্ভাবনা একটা দ্বার।”
ধারণা করা হচ্ছে গবেষণাটি কার্যকরী এবং নিরাপদ প্রমাণিত হলে ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেশন ক্লিনিক, ক্লাসরুম কিংবা যারা গণিতিক সমস্যা সমাধানকে কঠিন কাজ মনে করে তাদের উপর প্রয়োগ করা হবে। TRNS কয়েক বছর হল আত্মপ্রকাশ করেছে। কিন্তু এটা কিভাবে মস্তিষ্কে প্রভাব রাখে তা এখনো অস্পষ্ট। এটা মনে করা হচ্ছে TRNS সরাসরি নিউরণের উপর প্রভাব তৈরি করে। মস্তিষ্কের উপর বৈদ্যুতিক শক এর গবেষণাটি অনেকেই ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো জটিল কোন সমাধান নিয়ে চিন্তিত হতে হবে না। দ্রুত এবং কার্যকরী উপায়ে সমাধান করার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র: দ্য টেক জার্নাল