দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উত্তর গুয়েতেমালায় একটি জঙ্গলের নিচে ৬০ হাজারেরও বেশি সময়কার মায়া সভ্যতা নির্মিত স্থাপনার সন্ধ্যান পাওয়া গেছে! স্যাটেলাইট চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজে ধ্বংসপ্রাপ্ত ওই স্থাপনাগুলির খোঁজ মিলেছে।
গবেষকরা উত্তর গুয়েতেমালায় একটি জঙ্গলের নিচে ৬০ হাজারেরও বেশি সময়কার মায়া সভ্যতা নির্মিত স্থাপনার সন্ধ্যান পেয়েছেন। স্যাটেলাইট চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজে ধ্বংসপ্রাপ্ত ওই স্থাপনাগুলির খোঁজ মিলেছে বলে সিএনএন এর খবরে বলা হয়েছে।
মায়া হলো একটি সম্প্রদায়ের নাম, যাদেরকে মেক্সিকান-আমেরিকান নাগরিক হিসেবে মনে করা হতো। তবে ওই সম্প্রদায়ের কোনো লোক পৃথিবীতে আর অবশিষ্ট নেই। বহুবছর আগেই মায়া সভ্যতার বিলুপ্তি ঘটেছে।
গহীন ওই জঙ্গলের নিচে ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরোনো ঘর-বাড়ি, উঁচু দালান ও ৯০ ফুট লম্বা একটি পিরামিডের সন্ধ্যান পাওয়া যায়। তবে ওই পিরামিডকে স্থানীয়রা এতোদিন দেখে আসলেও তারা পিরামিডটিকে পাহাড় বলেই মনে করতো।
জানা যায়, লেজার রশ্মি সজ্জিত একটি বিমান হতে ওই সম্প্রদায়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরীর বিস্তারিত জানার জন্য অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ এবং স্থির চিত্র নেওয়া হয়েছে। পরে গবেষণায় দেখা যায় যে, মায়া সভ্যতার লোকেরা প্রকৃতপক্ষে একক কোনো জাতি ছিল না। সেখানে বিভিন্ন নগরীর মানুষ এসে সমবেত হতো। মায়ানদের সম্পর্কে পূর্বে যে ধারণা পোষণ করা হতো, তার চেয়েও অনেক উন্নত ছিল এই মায়া সম্প্রদায়, অন্তত গবেষণা থেকে গবেষকরা এমন তথ্য পেয়েছেন।
সে সময়কার সভ্যতার দিক হতে অনেক এগিয়ে ছিল মায়ানরা। তখন কৃষিকাজ, সেচসহ প্রতিরক্ষা খাতে বেশ সমৃদ্ধ ছিল মায়ানরা। আবার যোগাযোগ ব্যবস্থাও ছিল ওই সময় বেশ উন্নত। সেখানে অনেকগুলো পথের চিহ্নও পাওয়া গেছে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফি এই মায়া সম্প্রদায় নিয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে। তারপরই গবেষণায় নামে প্রত্নতত্ত্ববিদরা। এই বিষয়ে আমেরিকার নিউ অরলিন্সের টুল্যানে ইউনিভার্সিটির গবেষক মার্শেলো কান্টো বলেছেন, এটি আবিষ্কারের কারণে জানা গেলো, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীন নাগরিকরা কিভাবে জীবন-ধারণ করতো এবং কিভাবে চলাফেরা করতো। তাদের সভ্যতায় আধুনিকতার ছোঁয়াও পাওয়া গেছে।
খবরে বলা হয়েছে, এই মায়া সম্প্রদায়ের ওই নগরীর আয়তন ছিল ২ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটারের সামান্য বেশি। ওই সম্প্রদায়ে অন্তত এক কোটি লোক বসবাস করতেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ওই এলাকাটি গুয়েতেমালা এবং মেক্সিকো সীমান্তের নিকটে অবস্থিত। পূর্বের গবেষণাগুলোতে যা বলা হয়েছিল, এবারের গবেষণায় ওই সম্প্রদায় নিয়ে আরও ব্যাপক ধারণা পাওয়া গেছে।
গত ১০০ বছর ধরে ধারণা করা হচ্ছিল যে, ওই এলাকায় অন্তত কোনো মানুষের বাস হতে পারে না। কারণ এতো প্রতিকূল আবহাওয়ায় কোনো মানুষ বসবাস করতে পারে না। পূর্বে ধারণা করা হতো মায়া সম্প্রদায়ের উন্নত কোনো অবকাঠামো ছিল না। সেখানে ছিল একটি স্বাধীন নগরী, তবে সেটি ছিল খুব ছোট। কিন্তু এই গবেষণার পর সেসব তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে।