The Dhaka Times Desk স্যাটেলাইট টিভির জগতে বাংলা যতগুলো চ্যানেল রয়েছে তার মধ্যে ভারতীয় চ্যানেল ‘স্টার জলসা’ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের দর্শকদের মন কেড়েছে। বাংলাদেশে এতগুলো চ্যানেল থাকতে ভারতীয় বাংলা চ্যানেল ‘স্টার জলসা’ কেনো? এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই তৈরি হয়েছে আজকের ব্যতিক্রমি এই প্রতিবেদন।
যে সব সিরিজ স্টার জলসায় সবচেয়ে জনপ্রিয় তার মধ্যে ‘মা’ বাংলাদেশী দর্শকদের বেশি জনপ্রিয় সিরিজে পরিণত হয়। কারণ এই সিরিজটি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে এই মেগা সিরিয়াল ‘মা’, এ সময়ের সবচেয়ে মেগা সিরিয়াল ‘মা’ সিরিজ বর্তমানে এক ক্লাইমেক্স পর্যায়ে এসে গত রবিবার শেষ হয়েছে। বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষের একটি জনপ্রিয় মেগা টিভি সিরিজ ‘মা’ দর্শকদের যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছে। বলতে গেলে এই ‘মা’ সিরিজটির কারণেই বাংলাদেশের দর্শকরা স্টার জলসার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। এই সিরিজের লেখকের সবচেয়ে বড় একটি গুণ তা হলো, ঝিলিক সব সময় সব মানুষের বিপদে পাশে এসে দাঁড়ায়। কখনও বা বিপদের কথা জানলেও মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়। আবার নিজের ক্ষতি করেই মানুষের উপকার করে। এমন সব ভালো বিষয়গুলো দর্শকদের মনে এক ধরনের অনুভূতি সৃষ্টি করে- আর তাই মেগা সিরিয়ার ‘মা’ দর্শকদের কাছে এতো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
স্টার জলসায় বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা হতে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে নতুন এপিসোড। রবিবার বাদে প্রতিদিন চলে এসব পর্ব। ভাষা, ইষ্টি কুটুম, বধু কোন আলো লাগলো চোখে, @ভালাবাসা.কম, মা, টাপুর টুপুর, আঁচল, সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে, কেয়ার করি না, ঘরে ফেরার গান, তুমি আসবে বলে, বোঝে না সে বোঝে না, মহাভারত, বধুবরণ ইত্যাদি সিরিজগুলো দর্শকদের মন জয় করেছে। যদিও রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে পরদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এসব নাটকই রিপিট (পুন:প্রচার) হয়ে থাকে।
যে কারণে বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে প্রিয় স্টার জলসা
বাংলাদেশের এতগুলো চ্যানেল থাকতে ভারতীয় বাংলা চ্যানেল কেনো এত প্রিয় হলো এ প্রশ্ন সবার মনে আসতেই পারে। শুধু তাই নয় বেশ বিতর্কও রয়েছে। কারণ ভারতীয়রা আমাদের চ্যানেল কেনেন না, অথচ আমাদের দেশে কেনো এত আড়ম্বরভাবে আমরা স্টার জলসা দেখি? এর অনেকগুলো কারণ রয়েছেঃ
প্রথমত: সিরিজগুলো হয় মেগা।
দ্বিতীয়ত: রবিবার বাদে প্রতিদিন হয়।
তৃতীয়ত: সময় মতো দেখতে না পারলেও পুন:প্রচারের কারণে অন্য কোন সময় দেখা যায়।
চতুর্থত: ইন্টারনেটে যে কোন সিরিজ পরদিন দেখা যায়।
পঞ্চমত: নির্ধারিত সময়ের বিজ্ঞাপন।
অর্থাৎ আধা ঘণ্টার মধ্যে ২২ মিনিট নাটক এবং ৪ মিনিট করে ২ বার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। বিজ্ঞাপনের শেষের ২ মিনিট আবার ফিরে আসার সময় মাইনাস হয়। আর বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে নাটক হয় এক সাপ্তাহিক ভাবে তাছাড়া ৫ মিনিট বা ১০ মিনিট হওয়ার পরই শুরু হয় বিজ্ঞাপন। আর সে বিজ্ঞাপনের কোন নিয়ম নেই। কখনও কখনও দেখা যায় ৫ মিনিট নাটক আর ১৫ মিনিটই হয় বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশের একটি চ্যানেলের কথা বলছি। ঈদের পর বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত লেখকের ছবি হচ্ছিল। সেখানে দেখা গেলো ১০ মিনিট ছবি হচ্ছে আর ১৬ মিনিট হচ্ছে বিজ্ঞাপন। আর এভাবেই ছবির শেষ পর্যন্ত দর্শকদের দেখতে হলো। তবে হয়তো এটি একজন জনপ্রিয় লেখকের ছবি হওয়ার কারণে দর্শকরা বিরক্ত বোধ করলেও ছবি দেখেছেন। তবে অবশ্যই বিজ্ঞাপন দেখেন নি। অন্তত যে সব দর্শক একটু সময়ের হিসাব করেন তারা তো এই ১৬ মিনিট অন্য চ্যানেলে ছিলেন!
এই হলো আমাদের দেশের চ্যানেলগুলোর অবস্থা। যদিও বর্তমানে দু’একটি নতুন চ্যানেল বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা দেখাচ্ছেন। তবে সেটি ইচ্ছে করে নাকি বিজ্ঞাপন না পাওয়ার কারণে তা অবশ্য জানা নেই। আমাদের দেশেও বহু ভালো ভালো রাইটার আছেন। ইণ্ডিয়ান নাটকের থেকে অনেক মান সম্পন্ন নাটক তারা তৈরি করেন। কিন্তু উপরোক্ত নানা সমস্যার কারণে দর্শকরা আজ ক্রমেই দেশীয় বাংলা চ্যানেল থাকা সত্বেও ভারতীয় বাংলা চ্যানেলসহ বিদেশী অন্যান চ্যানেলের প্রতি আসক্ত হচ্ছেন। বিষয়গুলো বাংলাদেশের যারা চ্যানেল পরিচালনা করেন তাদের ভেবে দেখা দরকার।