দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘কাজী ক্যাসল’ সিলেটের ইসলামপুর এলাকায় নির্মিত এই বাড়িটি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়ি হিসেবে পরিচিত। এই বাড়িটির বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ কারুকাজ এবং আসবাবপত্র দেখলে মনে হবে রীতিমতো রাজপ্রাসাদ। সিলেটের বিশিষ্ট শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান এই বাড়িটির মালিক। ৮০ হাজার স্কোয়ার ফিট বাড়িটির আনুমানিক ব্যয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
তবে অনেকের মতে এর ব্যয় তার থেকেও বেশি। বাড়িটির নিমার্ণ ব্যয় সম্পর্কে বাড়ির মালিক বলেন, “আমি নিজের ব্যবহারের জন্য বাড়িটি নির্মাণ করেছি। তাই এটি নির্মাণে কত ব্যয় হয়েছে, তা হিসেব করে দেখিনি। এটি আমার ব্যবসা হলে হিসেব রাখতাম। কত দিয়ে কিনেছি আর কত বেচবো, লাভ-ক্ষতির হিসেব রাখতাম। বাড়ির প্রয়োজনে যখন যা লেগেছে, আমি খরচ করেছি।”
মাহতাবুর রহমান মূলত প্রবাসী। তিনি জানান দেশে এসে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে থাকতেই বাড়িটি নির্মাণ করেছেন । তিনি বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড আল-হারামাইন পারফিউমস্ গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এছাড়া তিনি এনআরবি ব্যাংকেরও চেয়ারম্যান। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক টানা তিনবার তিনি সিআইপি নির্বাচিত হন।
মাহতাবুর রহমান ২০১৩ ও ১৪ সালে বাংলাদেশে সর্বাধিক রেমিটেন্স পাঠানোর স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ ব্যাংক রেকমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
তিন তলা বিশিষ্ট বাড়ীটি তৈরি করতে ২৫০ শ্রমিকের ৮ বছর সময় লেগেছে। বাড়িটি নির্মাণে কাজ করেছেন চার দেশের প্রকৌশলী।
বাড়িটির ডিজাইন করার জন্য তিনি ডুবাই থেকে প্রকৌশলী নিয়ে আসেন। পরে ইন্টেরিয়র ডিজাইন করেন লেবাননের প্রকৌশলী। পুরো বাড়ির লাইটিংসয়ের কাজ করে জার্মানের কোম্পানি টিফেনি লাইটিং। এছাড়া ফ্রান্সের একটি কোম্পানি বাড়িটির ফ্লোরের কাজ করেন।
প্রায় ৮ একর জায়গার ওপর বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ বাড়ির ছাদে রয়েছে হ্যালিপ্যাড, সুইমিংপুল, স্টিমবাথ ও লিফটসহ আধুনিক স্নানাগার। ২৯টি মাস্টার বেডের ডিজাইন করা হয়েছে ২৯টি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আলোকে।
পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক কক্ষ। ভবনের নিচ তলায় রয়েছে ৯টি ডাইনিং রুম, ১৪টি ড্রইং রুম। আছে দুটি লিফট। অভ্যন্তরে রয়েছে দামি সব আসবাবপত্রে সাজানো। অভিজাত ইতালিয়ান বুক ম্যাচিং ওয়ান প্লেট মার্বেলের আধিক্য আছে পুরো বাড়ি জুড়ে। এছাড়া বাড়ির ভেতরে যত্ন করে রাখা হয়েছে সৌদি আরবের ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের উপহার দেয়া পবিত্র কাবা শরিফের দরজার রেপ্লিকাটি।
ব্যয় এবং বিলাসবহুল হওয়ায় এটি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়ি হিসেবে পরিচিত।