দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো পশু-পাখিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনা মাঝে-মধ্যেই ঘটে। এবার এমনই এক মৃত্যুদণ্ড হতে রক্ষা পেলো পেনকা নামের গরুটি!
বুলগেরিয়ার প্রতিবেশী দেশ সার্বিয়াতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মৃত্যুদণ্ডই হতে যাচ্ছিল পেনকা নামের এই গরুটির। তবে পশু অধিকারকর্মীদের জন্য রক্ষা পেলো পেনকা নামে এই গরুটি।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পেনকা নামে এই গরুটি বুলগেরিয়ার ছোট্ট গ্রাম কোপিলোভৎসিতে বসবাস করে। গত মাসে ঘাস খেতে খেতে হঠাৎ গরুটি চলে গিয়েছিল পার্শ্ববর্তী দেশ সার্বিয়াতে।
গর্ভবতী এই গরুটির খোঁজ পেয়ে সার্বিয়া প্রশাসন যোগাযোগ করে বুলগেরিয়ার সঙ্গে। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই পেনকা ফেরত আসে নিজের দেশে।তবে তারপরই ঘটে বিপত্তি; ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকায় গরুটিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায় বুলগেরিয়া সরকার।
ইউরোপীয় কমিশনের নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা রয়েছে যে, ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশের মধ্যে গরু বা অন্য জন্তু-জানোয়ার নিয়ে ঢোকার সময় সীমান্তের ফাঁড়িতে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হয়। সে ক্ষেত্রে পশুটি যে সুস্থ রয়েছে, তারও প্রমাণ দিতে হয়। তবে পেনকা যে পেটের দায়ে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছিল তা কে বলবে!
পেনকার অপরাধ শুধু সীমান্ত পেরোনোতে সীমাবদ্ধ ছিলো তা না; আন্তর্জাতিক আইন ভাঙার খড়গও তার মাথায় চড়ে। সার্বিয়া ইইউর সদস্য নয়, তবে বুলগেরিয়া সদস্য, তাই আইন মেনে গরুটিতে শুলে চড়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়।
তবে প্রতিবাদে সরব হলো পশু অধিকারকর্মীরা। পেনকার প্রাণরক্ষায় অনলাইনে একের পর এক আবেদন করতে থাকে। দেশ-বিদেশের পশুপ্রেমী সংগঠনের সঙ্গে মাঠে নামেন বিটলস তারকা পল ম্যাকার্টনিও।
জানা যায়, ব্যাপক শোরগোলের পর ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে পেনকার মামলাটি পুনর্বিবেচনায় রাজি হয়েছে বুলগেরিয়ার খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা। যে কারণে মুক্তি পেতে চলেছে গরুটি। জর্জিভা দম্পতিও এখন তাদের গরুটির ঘরে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।
উল্লেখ্য, পেনকা বেঁচে গেলেও পশুপ্রেমী সংগঠন ‘ফোর পজ’ বলছে যে, এভাবে পশুদের হত্যা করা এক নৃশংসতা। আইনে যে ফাঁক-ফোঁকর রয়েছে, এবার সেটি দূর হওয়া প্রয়োজন।