দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সিলেটের বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে এক দুর্ঘটনার পর গ্যাস সরবরাহে বিপর্যয় ঘটে। গতকাল বাসা-বাড়ি সিএনজি স্টেশনে গ্যাস না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
গ্যাসের চাপের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে অসংখ্য মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। প্রসেসিং প্লান্টের একটি গ্যাসকেটে শনিবার সন্ধ্যায় ত্রুটি ধরা পড়লে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ গ্যাসক্ষেত্রটি তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্লান্টের পাইপলাইন শেষ পর্যন্ত মেরামত করা সম্ভব হলেও কম্প্রেসার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঠিক করা যায়নি। ফলে গ্যাসের চাপ মারাত্মক কমে গেছে। অবশ্য গতকাল রাতেই পেট্রোবাংলা বলেছে, গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, গ্যাসের একেবারেই প্রেসার নেই।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্রটি শনিবার বন্ধ হয়ে গেলে সাড়ে আট কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমে যায়। গ্যাসের অভাবে তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন কমে গেছে দেড় হাজার মেগাওয়াট। কবে নাগাদ কম্প্রেসার ঠিক হবে তার কোনো ঠিক নেই। চাপ কমে যাওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্পকারখানা ও আবাসিকে গ্যাস সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। গতকাল রবিবার রাত ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় কমপক্ষে এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে দিনের বেলায় ও সন্ধ্যায় লোডশেডিং বেড়েছে। দেশে গড়ে উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এরমধ্যে গ্যাস থেকে উৎপাদন হয় সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের মতো। জানা যায়, প্রসেসিং প্লান্টের একটি গ্যাসকেটে ত্রুটি ধরা পড়ার পর এ তথ্য সরকারের সংশিস্নষ্টদের জানানো হয়। তবে তিতাস গ্যাসসহ দেশের গ্যাস বিতরণ কম্পানিগুলো আগেভাগে এ তথ্য তাদের অঞ্চলের গ্রাহকদের না জানানোর ফলে কেও আগাম প্রস্তুতিও নিতে পারেনি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে শেভরন তথ্য নিয়ে লুকোচুরি করছে- এমন অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রসেসিং পস্নান্টের গ্যাসকেটে ত্রুটি দেখার পর সব কূপ বন্ধ করে দেওয়া হয় গত শনিবার সন্ধ্যায়। কূপ বন্ধের আগে পেট্রোবাংলাকে তারা জানিয়েছে। কিন্তু কূপ এলাকার লোকজনের ভাষ্য, শনিবার সন্ধ্যার দিকে তারা বিকট একটি শব্দ শুনতে পায়, যা সম্ভবত প্রসেসিং প্লান্টের পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটনার। কিন্তু এ তথ্যটি চেপে গেছে কোম্পানি শেভরন। এমন খবর বেরিয়েছে অনলাইন পত্রিকা মাধ্যমে।
জানা গেছে, বিবিয়ানার দুর্ঘটনার পর ঢাকায় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম আসছে। এর আগেই এ অঞ্চলে ৩০০ মিলিয়ন গ্যাসের ঘাটতি ছিল। সব মিলিয়ে ঢাকায় গ্যাসের ঘাটতির পরিমাণ বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪০০ মিলিয়ন। এই বিশাল ঘাটতি সামাল দিতে ঢাকায় তিতাস কর্তৃপক্ষ গ্যাস রেশনিং করছে বলে জানা গেছে। (ছবি-দৈনিক যুগান্তর)