দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সৌদি আরবের ২১ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার জের হিসেবে এই ২১ সৌদি নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ কার্যকর করছে দেশটি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। তবে ওই ২১ কর্মকর্তার নাম পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ার করেছে যে, সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এটাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেষ পদক্ষেপ নয়।
তুরস্কের ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে গত ২ অক্টোবর প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপি নানা সমালোচনার মুখে ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে প্রথমবারের মতো জামাল খাশোগির নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
তবে রিয়াদ দাবি করে বলেছে যে, খাশোগিকে তাদের হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না। জামাল খাশোগি কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার মৃত্যু ঘটে। ২২ অক্টোবর ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর দাবি করেছেন যে, ‘নীতিবিবর্জিত এই অভিযানের’ বিষয়ে সৌদি নেতৃত্ব কিছুই জানতো না। তবে সৌদি আরবের এসব খোড়া ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারছে না আন্তর্জাতিক বিশ্ব। সৌদির অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের বিরুদ্ধে শুরুতে নমনীয় থাকলেও ইতিমধ্যেই কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছেন। মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো এই হত্যাকাণ্ডকে ইতিহাসের জঘন্যতম গুম আখ্যা দিয়েছেন তিনি। একই দিনে সৌদি যুবরাজের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারেও একমত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নুয়ার্ট গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ২১ সৌদি নাগরিকের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি জানান যে, এদের মধ্যে যাদের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ভিসা রয়েছে, তাদের ভিসা ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ভবিষ্যতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন যে, ‘ওই ঘটনায় এই ২১ জনের নেওয়া পদক্ষেপই শেষ পদক্ষেপ নয়। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছি যে, খাশোগিকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য নেওয়া কাণ্ডজ্ঞানহীন সহিংস কোনও পদক্ষেপ মেনে নেবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।’
জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনাকে পরিকল্পিত নির্মম হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়ে দায়ীদের সাজা দাবি করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তিনি বলেছেন, ঘাতকরা যতো উচ্চ পর্যায়েরই হোক না কেনো, তাদের সকলকেই শাস্তি পেতে হবে। সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম না নিলেও এরদোয়ান বলেছেন যে, সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ যিনি দিয়েছেন, তাকেও জবাবদিহি করতে হবে।