গতকাল সেমিফাইনালে ইতালির সাথে ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ের ১২০ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকার পর অবশেষে পেনাল্টি শুট-আউটে গিয়ে ফাইনালের টিকেট পেয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন। পেনাল্ট শুট-আউটে ৭-৬ এ জিতে যায় তারা। গত বছর ইউরোর ফাইনালে ইতালিকে ৪-০তে উড়িয়ে দিলেও এবার তত সহজে পার পায়নি স্পেন, খেলা হয়েছে সমানে সমানে। ভিসেন্তে দেল বস্কের দল বল ধরে রাখার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে গিয়ে চূড়ান্ত সফলতার দেখা পেথে ব্যর্থ হয়েছে। ইতালিও ব্যর্থ হয়েছে অনেকগুলো সুযোগ কাজে লাগাতে।
ম্যাচের শুরুটা অবশ্য ভালমতই করেছিল ইতালি। দর্শক সমর্থন ছিল, প্রতিআক্রমণেও দুর্দান্ত ছিল তারা। ১৭ মিনিটে আন্দ্রে পিরলোর বাড়ানো বলে ম্যাজিও হেড করলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, এর এক মিনিট পরে ড্যানিয়েল ডি রসির হেডেরও পরিণতি একই। তার আবার এক মিনিট পরে দুই সেন্টার ব্যাকের মাঝে ফাঁকা জায়গায় দাড়িয়েও সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মার্চিসিও, তার শট চলে যায় বাইরে।
টানা আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে গতি কমিয়ে খেলা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দিকে মনোযোগ দেয় স্পেন, কিন্তু ইতালি তারপরও সুযোগ পেয়ে যায়। ৩৬ মিনিটে ম্যাজিওর হেডে দুর্দান্ত সেভ করে দলকে পিছিয়ে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক ক্যাসিয়াস। এইসব গোলমিসের জন্য আরেকটু হলেই ভুগতে হচ্ছিল ইতালিকে, কিন্তু তোরেসের শটও মিস করে বসে গোলপোস্ট।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে অবশ্য আরো ভাল খেলতে শুরু করে স্পেন। বদলি হিসেবে নামা জেসাস নাভাসের ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট কোনমতে ঠেকান বুফন। পেড্রো আর পিকেও দুটো চমৎকার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। আস্তে আস্তে খেলাটা নির্জীব হয়ে যায় স্পেনের সৃষ্টিশীলতার অভাব আর ইতালির গোল করার প্রচেষ্টায় ভাটা পড়লে, গোলশুন্য ৯০ মিনিট শেষে খেলা তাই গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
ম্যাচের সেরা সুযোগটি ইতালি পায় অতিরিক্ত সময়ের তিন মিনিট পরেই। ম্যাজিওর ক্রসে বল যায় এমানুয়েল জিয়াচেরিনির পায়ে, কিন্তু তার শট গোলপোস্টের বারে লেগে ফিরে আসে। স্পেনও তিনটা ভাল সুযোগ পেয়েছিল। ৯৯ মিনিটে বোনুচ্চির মাথার ওপর দিয়ে ইনিয়েস্তার বাড়ানো চমৎকার পাসে আলবার ভলি চলে যায় ওপর দিয়ে। অতিরিক্ত সময়ের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে জাভির দূরপাল্লার দুর্দান্ত শট বুফন ঠেকিয়ে দেন ঝাপিয়ে পড়ে। মিনিটখানেক পরে এবার নাভাসের শট, আবারও ইতালির ত্রাতা হয়ে খেলার ভাগ্য পেনাল্টি শুট-আউটে নির্ধারিত হওয়া নিশ্চিত করেন বুফন।
পেনাল্টিতে দুই দলই ঠিকমত শুরু করেছিল। কিন্তু ৬-৬ এ সমতা থাকা অবস্থায় ইতালির বোনুচ্চি তার শট আকাশে মেরে বসলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণের দায় এসে চাপে স্পেনের নাভাসের কাঁধে। এবার তিনি মিস করেননি, বল জালে ঢুকিয়ে স্পেনকে তুলে দেন ফাইনালে।
আগামী রবিবার ফাইনালে কনফেডারেশনস কাপের শিরোপা লড়াইয়ে ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে স্পেন। একই দিনে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে ইতালি।