দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীর দামি জনপ্রিয় ধাতব পদার্থগুলোর মধ্যে সোনা সবার প্রথমে রয়েছে। প্রতিটি দেশেই এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি সোনার ব্যবহার দেখা যায় গহনা তৈরিতে। এই জনপ্রিয় ধাতব পদার্থ সম্পর্কে আজ আমরা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য জানবো।
(০১) ঔষধ হিসেবে সোনার ব্যবহারঃ
প্রথমেই হয়ত ভাবছেন ধাতব পদার্থ কিভাবে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়? তবে আজব হলেও এটাই সত্য যে ‘গাট ফোলানো বাথ’ (Rheumatoid Arthritis) রোগের চিকিৎসায় সোনার মিশ্রিত এক ধরণের লবণ সিরিঞ্জে করে আক্রান্ত হাড়ের সংযুক্ত স্থানে প্রবেশ করানো হয়। এই মিশ্রণ ‘গাট ফোলানো বাথ’ (Rheumatoid Arthritis) চিকিৎসায় বেশ কার্যকরি। বর্তমানে প্রস্টেট ক্যান্সার’ এবং ‘HIV’ রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সোনার ব্যবহার হচ্ছে। ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসা, দাঁতের ক্ষত ভরাট করা সহ বেশ কিছু চিকিৎসায় সোনার ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া ক্যান্সারের কোষ নির্ণয়ের এবং আক্রান্ত কোষ ধ্বংসের জন্য বর্তমানে সোনার তেজস্ক্রিয় আইসোটোপও ব্যাবহার করা হচ্ছে।
২। পৃথিবীতে সোনা কিভাবে আসলোঃ
বিজ্ঞানীদের ধারণা সোনা পৃথিবীতে সৃষ্ট ধাতু নয়। কোটি কোটি বছর পূর্বে পৃথিবী সৃষ্টির সময় বড় বড় সব উল্কা পৃথিবীকে আঘাত করে আর সেই উল্কা থেকেই পৃথিবীতে সোনার আগমন হয়েছে।
৩। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্বর্ণের টুকরোঃ
সাধারণত মাটি খনন করে সোনা উত্তোলন করা হয়। এ পর্যন্ত পৃথিবীতে উত্তোলনকৃত সবচেয়ে বড় স্বর্ণের টুকরার ওজন ৬৮ কেজি। এই টুকরার নাম রাখা হয়েছিল ‘স্বাগতম দলা’ (Welcome Nugget)। অষ্ট্রেলিয়ার দুজন ব্যক্তি যখন এই স্বর্ণের দলা আবিষ্কার করেন, তখন খুশিতে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন।
৪। সোনার ব্যবহারঃ
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সোনা উত্তোলন করা হয় দক্ষিন আফ্রিকায়। পৃথিবীতে আবিষ্কৃত মোট সোনার খনির মধ্যে ২/৩ অংশ খনি রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। মোট সোনার প্রায় ৭৮% গহনা তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং অবশিষ্টাংশ ব্যবহৃত হয় ইলেক্ট্রনিক শিল্পে। কারণ সোনা তড়িৎ চালনায় ভাল উপযোগী এবং কম উত্তপ্ত হয়। এছাড়া সোনা নরম হওয়ায় খুব সূক্ষ আকার দেওয়া সহজ হয়।
৬। আমাদের ফোনেও সোনা রয়েছেঃ
জেনে অবাক হলেও এটাই সত্য যে আমাদের ফোনের মধ্যেও অনেক সোনা রয়েছে। কিন্তু কিভাবে? আগেই বলা হয়েছে ইলেক্ট্রনিক শিল্পে সোনার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। United Nations Environment Programme (UNEP) এর তথ্য অনুসারে ১টন ওজনের ফোনের সার্কিটের মধ্যে প্রায় ৩৪০ গ্রাম সোনা রয়েছে।
৭। এক আউন্স সোনায় ফ্লোর ঢেকে ফেলা সম্ভবঃ
সোনা এতটাই পাত করা যায় যে, মাত্র এক আউন্স সোনা পিটিয়ে পাত করে তা দ্বারা একটি রুমের ফ্লোর ঢেকে ফেলা সম্ভব।
সবচেয়ে আজব বিষয় হচ্ছে ২৮ গ্রাম সোনা সংগ্রহের জন্য প্রায় ৩০ টন ওজনের মাটি খুঁড়তে হয়।