দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আয়রন ম্যান ছবির নায়ককে আকাশে উড়ার সময় তার হেলমেটে ডিসপ্লে নেভিগেশন দেখে আমরা অবাক হয়েছি। কিন্তু আর মুভিতে নয় এবার নিজের মোটর সাইকেল চালানোর সময় এ ধরণের হেলমেট ব্যবহার করা যাবে! কি বিশ্বাস হচ্ছে না? রাশিয়ার প্রযুক্তিবিদরা সেই রকম মোটর সাইকেলের একটি বিল্ট ইন নেভিগেশন ‘লাইভম্যাপ হেলমেট’ তৈরি করেছেন।
লাইভম্যাপ হেলমেট ব্যবহার করে রঙিন স্বচ্ছ ছবি ও লেখা আরোহী রাস্তা থেকে চোখ না সরিয়ে স্পীড, সময় এবং দিক নির্দেশনা দেখতে পারবে। মোটরসাইকেল আরোহীদের কাগজের মানচিত্র বা টাচ স্ত্রিণ নেভিগেশনের বদলে একটি কার্যকরী নেভিশন টুল এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রাস্তায় চলার সময় মানচিত্র বা নেভিগেশন সংকেত দেখার ফলে আরোহীর মনোযোগ নষ্ট হয় এবং তা অত্যন্ত বিপদজনক। এখন পর্যন্ত ফাইটার প্লেনের বৈমানিকরা এই ধরণের যন্ত্র ব্যবহার যে সুবিধা ভোগ করেছে তা অদূর ভবিষ্যতে সাধারণ মোটর সাইকেল আরোহীরাও ভোগ করতে পারবে। এই হেলমেট এর সম্মুখে ডিসপ্লে থাকবে এবং হেলমেটটি সাধারণ হেলমেটের তুলনায় কিছুটা বড় হবে।
কি সুবিধা থাকছে এই হেলমেটে
- দৃষ্টি সম্মুখে পরিষ্কার ছবি দেখাবে যা সবসময় ফোকাসে থাকবে
- সম্পূর্ণ রঙিন স্বচ্ছ ছবি এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমানের হেলমেটের মত চোখের দৃষ্টির ডানপাশে দেখাবে যা আরোহীর মনোযোগ নষ্ট করবে না এবং তা হবে সম্পূর্ণ নিরাপদ
- দীর্ঘ কার্যকারিতার জন্য দুটি ৩০০০ mah ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে
- চলার সময় ভয়েস কন্টোলের জন্য উভয় হাতের সংস্পর্শবিহীন মাইক্রোফোন থাকবে
- দুটি এয়ারফোন
- আলোর অবস্থা অনুসারে ছবির উজ্জ্বলতা দেখার উপযোগী করার জন্য লাইট সেন্সর
- মাথার মুভমেন্ট ট্র্যাকিং করার জন্য জি সেন্সর, জাইরোস্কোপ, ডিজিটাল কম্পাস থাকবে
স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ডওয়েড ইন্টারফেস এর বদলে নিজস্ব সর্বনিম্ন ইন্টারফেস ব্যবহারের ফলে আরোহী রাস্তায় চলার সময় গেমস খেলতে বা ভিডিও দেখতে পারবে না। যদিও আধুনিক জটিল প্রযুক্তি সর্বত্র ব্যবহার এর ফলে জীবন যাত্রা সহজতর করছে তবুও যা এতদিন আমরা সাই-ফাই মুভিতে দেখেছি এখন লাইভম্যাপ হেলমেট মালিক সে রকম প্রযুক্তির অনুভুতি ভোগ করতে যাচ্ছে।
ইউজার ইন্টারফেস শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় এবং খুবই সাধারণ মানের। ভয়েস কমান্ড খুবই সংক্ষিপ্ত এবং সবগুলো কমান্ড স্বাভাবিক ও প্রাসাঙ্গিকভাবে বুঝতে সক্ষম হবে। যেমন ব্যবহারকারী সঠিক কমান্ড দিতে সমস্যায় পড়লে হেল্প কমান্ডের জন্য শুধুমাত্র হেল্প বললেই হবে। স্পীড শূণ্যের কাছাকাছি এনে যেকোন সময় মানচিত্র দেখা যাবে। নিরাপত্তার খাতিরে বেশি স্পীডে মানচিত্র দেখা সম্পূর্ণ নিষেধ। হেলমেট টির ওজন প্রায় ১.৪ কেজি হতে পারে। রাস্তায় চলার সময় মানচিত্র ডাউনলোড করার প্রয়োজন পড়বে না কারণ মানচিত্র পূর্বেই প্রি-লোডেড থাকবে শুধুমাত্র নিয়মিত বিরতিতে আপডেট করতে হবে।
মস্কো ডিপার্মেন্ট অব সায়েন্স, ইন্ডাস্টিরিয়াল পলিসি এন্ড এন্টারপ্রাইজ, স্টেট ফাউন্ডেশন ফর এসিস্ট্যান্স টু স্মল ইনোভেশন এন্টারপ্রাইজ ইন সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি অব রাশিয়ান ফেডারেশন, সকলকভো ফাউন্ডেশন এর সমর্থনে আউটার শেল, ইলেক্টনিক বোর্ড, অপটিকস এবং সফটওয়্যার এর প্রোটোটাইপ তৈরি হয়েছে। প্রস্তুতকারকরা হেলমেটি সর্বপ্রথম ২০১৪ সালে তৃতীয় কিস্তিতে ইউএস এবং কানাডায় বাজারজাত করার পরিকল্পনা করেছে। ২০১৪ সালে চতুর্থ কিস্তিতে অস্ট্রেলিয়া এবং ইউকেতে বাজারজাত করার পরিকল্পনা করেছে। প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হেলমেটটি $২০০০ মূল্যে বিক্রির পরিকল্পনা করছে কিন্তু ইনডিগোগো ক্যাম্পেইনে ডোনার হিসেবে অগ্রিম অর্ডারে $১৫০০ পাওয়া যাবে।
তথ্যসূত্র: দি টেক জার্নাল