দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সব পণ্যের চাহিদা যেমন সব সময় এক রকম থাকে না, ঠিক তেমনি সব চাকরির বাজার সব সময় এক রকম অবস্থায় থাকে না। সাধারণত নবম শ্রেণী থেকেই নিজেদের ক্যারিয়ার নির্ধারন করা উচিৎ। তবে এই বয়সে অনেকেই ক্যারিয়ার কি তাই বোঝে না। সাধারণত ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা শুরু হয় এসএসসি বা এইচএসসি থেকে। কেউ কেউ ক্যারিয়ার নির্ধারন করেন বড় ভাই, বাবা, চাচা, মামা বা পাড়ার কোন বড় চাকরিওয়ালা ব্যক্তির সাথে মিল রেখে।
যেমন পাশের বাসার কেউ যদি একজন ভাল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে অনেক টাকা আয় করে, তবে অনেকেই নিজেও ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে ফেলে। বিশেষ করে আমরা যখন জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করি তখন সবচেয়ে বড় যে ভুলটা করি তা হচ্ছে সেই সময়ে যে চাকরির বেশি চাহিদা রয়েছে অর্থাৎ যে চাকরির বাজার তখন বেশি চাহিদাপূর্ণ থাকে সেইটা অনুযায়ী জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে ফেলি। যার ফল স্বরুপ লেখাপড়া শেষ করে দেখি সেই চাকরির বাজারে অনেক প্রতিযোগী সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রতিযোগীর তুলনায় ওই বিষয়ের চাকরির বাজার অনেকটাই নিম্নগামী হয়েছে।
আর যখনি কেউ তার লক্ষ্য এবং পঠিত বিষয় অনুযায়ী চাকরি পায় না, তখনি যে বিষয়ে তার ভাল জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে চাকরি করতে ইচ্ছা পোষন করে। অন্যদিকে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও কম বেতনে কর্মী পেয়ে খুব আনন্দ প্রকাশ করলেও ভিতরে কিন্তু তাদের বিশাল লোকশানের আশঙ্কা থাকে। কারণ যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সে ওই বিষয়ে দক্ষ না।
৫ বছর আগে বিবিএ এর যেমন চাহিদা ছিল বর্তমানে তা অনেকটাই কমে গেছে। কারণ এখন বিবিএ এর এত বেশি চাকরি পার্থী বাজারে রয়েছে, যা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা মিটিয়ে আরো ৬০% বেকার হিসেবে বা অন্য চাকরিতে নিয়জিত রয়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে একজন ছাত্র যখন বর্তমান বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করে, তখন সে ভাবে না তার লেখাপড়া শেষ হতে যে সময় লাগবে তখন সেই চাকরির বাজার কেমন থাকবে।
বাংলাদেশের পেক্ষাপটে লক্ষ্য নির্ধারন করার পর সেই বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করতে কমপক্ষে ৬-৮ বছর সময় লাগে। ততদিনে সেই চাকরির বাজারে প্রচুর প্রতিযোগী এসে ভির করে এবং সেই চাকরির বাজার ব্যাপকভাবে নিম্নগামী হয়ে যায়।
তাই চিন্তাশীল ব্যক্তিদের মতে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে কখনই বর্তমান বাজারের সেরা এবং বেশি চাহিদাপূর্ণ চাকরি বিবেচনা করে লক্ষ্য নির্ধারন করা উচিৎ নয়। লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হলে নিজের চিন্তাধারাকে ৫-৭ বছর অগ্রগামী হয়ে ভাবতে হবে। অর্থাৎ ৫-৭ বছর পর কোন বিষয়ের চাকরির বেশি চাহিদা সৃষ্টি হবে। এবং সেইটা চিন্তা করেই জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। কারণ আপনার সেই বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করতে ৬-৮ বছর সময় লাগবে। তখন আপনার পঠিত নির্দিষ্ট বিষয়ের চাকরির চাহিদা বেড়ে যাবে। ফলে আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট চাকরিটা পেয়ে যাবেন। তাই বর্তমান বাজার নয় ভবিষ্যৎ বাজার বিশ্লেষণ করেই জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়।