দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হীরা এমনিতেই দামি একটি বস্তু। তারপরও এবার আরও দামি একটি হীরার সন্ধান পাওয়া গেছে কানাডার একটি খনিতে! এই হীরাকে দুষ্প্রাপ্য বলে অভিহিত করা হয়েছে।
এবার কানাডার একটি খনিতে পাওয়া গেছে দুষ্প্রাপ্য ও দুর্মূল্যের এক হীরকখণ্ড। ৫৫২ ক্যারটের ওই হীরকখণ্ডটি দেখতে অনেকটা মুরগির ডিমের মতোই। বরফে ঢাকা কানাডার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত ডিয়াভিক খনিতে এই দুষ্প্রাপ্য হীরার সন্ধান পাওয়া গেছে। ‘ডমিনিয়ন ডায়মন্ড মাইনস’ ও ‘রিও টিনটো’ গ্রুপের বিশেষজ্ঞরা খনি থেকে এই হীরার খণ্ডটি উত্তোলন করেন। কানাডার ইতিহাসে এই পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া হীরকখণ্ডের মধ্যেই এটিই সবচেয়ে বড় হীরকখণ্ড।
সিএনএন-এর খবরে বলা হয়, হলুদ রঙের যে হীরাটির সন্ধান পাওয়া গেছে, তা অত্যন্ত উচ্চমানের হীরা। এই শতকের সপ্তম বৃহৎ মাপের হীরকখণ্ড এটি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকৃতির ৩০টি হিরার মধ্যে এটি অন্যতম। সাধারণত আফ্রিকার খনিগুলোতে এমন হীরা পাওয়া যায়। এর আগে কানাডার খনি থেকে সবচেয়ে বড় যে হিরা পাওয়া গিয়েছিল, নতুন হীরকখণ্ডটি তার থেকে প্রায় তিন গুণ বড়। এই পাথরটি কাটা ও তার রুক্ষতা কমিয়ে পালিশ করার জন্য শীঘ্রই নিলাম হাঁকা হবে বলে রিও টিনটো গ্রুপ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা মতে, এই সোনার মতো হলুদ রঙের দুষ্প্রাপ্য হীরকখণ্ডটি মূল্যের দিক থেকেও দুর্মূল্য বলা যায়। কারণ হলো আমেরিকার নানা খনিতে পাওয়া হলুদ রঙের পাথরগুলির (টাইপ টুএ) মাথাটি সাদা হয়ে থাকে। সেগুলির দাম ধার্য করা হয় কিছুটা ছাড় দেওয়ার পর। তবে এই বিশেষ হীরকখণ্ডটির ক্ষেত্রে এমন কোনও ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
ডমিনিয়ন ডায়মন্ড মাইনস অ্যান্ড রিও টিনটো গ্রুপের সিইও শ্যেন ডার্গিন সংবাদ মাধ্যমকে এই বিষয়ে জানিয়েছেন, এই হিরেটি অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। তবে এই হীরকখণ্ডটির সম্ভাব্য মূল্য কতো হতে পারে, তা নিয়ে এখন কোনও মন্তব্য করেননি শ্যেন। এর আনুমানিক দাম কতো হতে পারে তা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে তিনি নারাজ। তার ধারণা মতে, এই হীরকখণ্ডটির রুক্ষতা কমানোর পর তার শরীরের প্রকৃতি এবং কোন পদ্ধতিতে তা কাটা হচ্ছে সে সবের উপর নির্ভর করবে এটির দাম। তবে এই দাম যে বিশ্বের সেরা পাথরগুলির মধ্যে অন্যতম হবে তা নিয়ে কোনো রকম সন্দেহ নেই বলে জানান তিনি।
সর্বশেষ ১৯০৫ সালে সবচেয়ে বড় মাপের হিরেটি পাওয়া গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। ৩১০৬ ক্যারেটের কালিনান হীরাটি পরে অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এরইমধ্যে দুটি হলো দ্য গ্রেট স্টার অফ আফ্রিকা এবং লেসার স্টার অফ আফ্রিকাটি লাগানো রয়েছে ব্রিটেনের রানির মুকুটে। বিগত কয়েক বছর ধরেই প্রযুক্তির নানা উন্নয়নের কারণে খনির ভিতর হতে পাথরের খোঁজ পাওয়া অনেক সহজতর হয়েছে। খনিতে ক্ষতিকারক কোনও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর গুঁড়ো করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতিও তেমন একটা আসেনি। যে কারণে এই ধরনের বড় বড় পাথরের সন্ধান পেতে বেশ সুবিধাও হয়েছে।