দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মহাকাশ সম্পর্কে চিন্তা করতে গেলেই মাথা গুলিয়ে যায়। মহাশূন্যে কিভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কোটি কোটি গ্রহ-নক্ষত্র। আমরা সৌর জগতের পৃথিবী নামক একটি ছোট গ্রহে বসবাস করি। মাঝে মাঝেই সৌর জগতে বিভিন্ন গ্রহের যায়। এবার বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করল সৌর জগতের সবচেয়ে দূরবর্তী গোলাপী রংয়ের গ্রহের।
অনেক দিন ধরেই বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের একদম শেষ প্রান্তে গোলাপী আলো দেখতে পান। কিন্তু কোনভাবেই সেই রহস্যের আসল কারণ জানতে পারছিলেন না। সম্প্রতি সেই আলোর রহস্য আবিষ্কৃত হয়েছে। কার্নেগি ইনস্টিটিউশন অফ ওয়াশিংটন-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্কট এস শেপার্ড এই গোলাপী রংয়ের গ্রহটি আবিষ্কার করেন। তার সহযোগী ছিলেন হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড থোলেন ও নর্দার্ন অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চার ত্রুজিল্লো।
এই তিন জনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যে গ্রহটি আবিষ্কার করা হয়েছে তার নাম দিয়েছেন ‘ফারআউট’। সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরুত্ব প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার। আর এই গ্রহটি সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরুত্বের প্রায় ১২০ গুণ দূরে অবস্থিত। এ পর্যন্ত সৌরজগতের আবিষ্কৃত গ্রহের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বেশি দূরে অবস্থিত।
বরফে ঢাকা গ্রহটি সূর্যকে খুব ধীর গতিতে প্রদক্ষিণ করছে। গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা বলেছেন এই গ্রহটি প্রায় ১০০০ বছর ধরে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের মাইনর প্ল্যানেট সেন্টার সম্প্রতি এই গ্রহের অস্তিত্বের কথা প্রকাশ করে। এই গ্রহের বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়ার হয়েছে ২০১৮-ভিজি-১৮। এর আগে আবিষ্কৃত হওয়া এরিস ছিল সৌর জগতের সবচেয়ে দূরুত্বের গ্রহ। এটি সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরুত্বের প্রায় ৯৬ গুণ দুরে অবস্থিত। তবে বর্তমানে আবিষ্কৃত ফারআউটই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি দূরুত্বের গ্রহ।
নাসার তথ্য মতে আধুনিক মহাকাশ যানে প্লুটোতে পৌছাতে সময় লাগে ৯ বছর। যেহেতু ফারআউট ফ্লুটো থেকেও ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি দূরে অবস্থিত, সেহেতু ফারআউটে পৌছাতে সময় লাগবে প্রায় ৩১ বছর।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন সূর্য থেকে এত দূরবর্তী হওয়ায় এবং এর ধীর গতিতে আবর্তনের কারণেই এর ভূপৃষ্ঠে এত বরফ জমেছে। বিজ্ঞানীদের এই টিম অক্টোবরে ‘দি গবলিন’ নামের আরো একটি গ্রহ আবিষ্কার করেছে।
এভাবেই যত দিন যাবে ততই আবিষ্কৃত হতে থাকবে নানা নতুন নতুন গ্রহ-নক্ষত্র। সেই সাথে আমরাও জানতে পারবো মহাকাশের নানা রহস্য।