দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষ হচ্ছে আরও গতিশীল। বর্তমানে মানুষের গতিশীল জীবনে সবচেয়ে আলোচিত দরকারি জিনিসটি হচ্ছে স্মার্টফোন। সব বয়সের মানুষের মাঝে বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহার বেড়েছে। দুই দশক আগেও হয়ত আমরা এমন সব জিনিস কল্পনা করতে পারতাম না যা আজ স্মার্টফোন আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছে।
বর্তমানে প্রযুক্তি জগতে জোরালো আবেদন নিয়ে স্মার্টফোন তাঁর ব্যাবহার কারীদের প্রিয় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। স্মার্টফোন নির্মাতারাও এর ব্যাবহার কারীদের জন্য চাহিদা পূরণ করতে সব সুযোগ-সুবিধা সমন্বিত করেছেন এ ডিভাইসে। সাধারণ মোবাইল ফোন তো বটেই, এমনকি কম্পিউটারের বিকল্প এই স্মার্টফোনগুলো বর্তমানে মানুষের প্রধান আকর্ষণের বিষয়বস্তু। সম্প্রতি অনলাইন ভিত্তিক লাইফ স্টাইল ম্যাগাজিন ম্যানস এক্সপি স্মার্টফোন আমাদের জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন এনেছে তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। চলুন আমরা এখন স্মার্টফোন আমাদের পৃথিবীতে যে সব পরিবর্তন এনেছে সেসবের মাঝে উল্লেখ যোগ্য ৫টি পরিবর্তনের বিষয়ে জেনে নি।
বিনোদনের ক্ষেত্রেঃ একটা সময় ছিল যখন মানুষ ক্যাসেট প্লেয়ারে গান শুনতে শুনতে কোমর দুলাত। সনির ওয়াক ম্যান এসে এসবকে এক দিকে সরিয়ে মানুষের গান শুনে বিনোদন নেয়ার ক্ষেত্রে বড় ধরণের পরিবর্তন আনলো। একি সময় মানুষ রীল ব্যাবহার করে মেপে মেপে ছবি তুলতো। কিন্তু স্মার্টফোন এসব কে তুচ্ছ জ্ঞান করে গান শুনা ও ছবি তুলার ক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন নিয়ে আসলো। স্মার্টফোন এক ক্লিকে গান, ছবি এবং মজার সব গেমস ব্যবহার কারীদের সামনে উপস্থাপন করে। খুব দ্রুতই স্মার্টফোন ক্যামেরা, মিউজিক প্লেয়ার, গেম স্টোর হিসেবে ব্যবহার হতে থাকে। এটি সহজে হাতে বহন যোগ্য একটি জনপ্রিয় বিনোদন যন্ত্রে পরিণত হল।
ব্যক্তিগত সহকারীঃ স্মার্টফোন একাধারে আপনার ইমেইল ক্লাইন্ট, এলার্ম ঘড়ি, নটিফায়ার, ক্যালেন্ডার, টাস্ক ম্যানেজার এবং রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করে। অতএব আপনার যদি একটি স্মার্টফোন থাকে তবে আপনার উপরের এসব কিছুই আলাদা ভাবে কেনা লাগবেনা। স্মার্টফোন একাই আপনার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে এসব কাজ করতে সক্ষম। বর্তমানে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম, আইফোন অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোন সমূহ আরও অনেক নতুন নতুন বিষয় বস্তুর সাথে তাঁদের ব্যবহার কারীদের পরিচয় করাচ্ছেন। আপনি শুধু স্মার্টফোন কে বলে দিবেন কি কখন করতে হবে এটি আপনাকে সময় মত সব কিছু ঠিক ঠাক জানিয়ে দিবে। যেমন আপনি যদি কোন ফ্লাইট সম্পর্কে জানতে চান তবে এতে সার্চ দিলেই আপনি পেয়ে যাবেন। আপনি কি দুপুরের খাবার অর্ডার দিতে চান? অথবা হোটেল বুকিং? কিংবা কোন খেলার টিকেট বুকিং? আপনি কি আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান? সবই এখন স্মার্টফোনে সম্ভব। স্মার্টফোন আপনাকে সব কিছু জানিয়ে দিতে সক্ষম।
দৈনন্দিন সংবাদঃ আপনাকে আর সংবাদ পত্র পেতে হকারের জন্য অপেক্ষা করতে হবেনা। স্মার্টফোন আপনাকে যখন সংবাদ পড়তে চান পড়ে নিতে পারবেন। যেমন আপনি যদি চান তাহলে নির্দিষ্ট সংবাদ পত্রের সফটওয়্যার আপনার স্মার্টফোনে ইন্সটল করে সেই সংবাদ পত্রের আপডেট পেতে পারেন। আপনি যদি দি ঢাকা টাইমস এর সকল সংবাদ পেতে চান তাহলে “দি ঢাকা টাইমস” এর এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন ইন্সটল করে নিলে খুব সহজে “দি ঢাকা টাইমস” এর আপডেট আপনার কাছে পৌঁচে যাবে। আপনি এখান থেকে এপ্লিকেশনটি ইন্সটল করে নিতে পারবেন। স্মার্টফোন কাগজের সংবাদ পত্রকে ই-সংবাদ পত্রে প্রতিস্থাপন করেছে এবং পাঠকদের কাছে খুব সহজে পৌঁচে দিচ্ছে।
গ্লোবাল কানেক্টিভিটিঃ গ্লোবাল কানেক্টিভিটি প্রথম শুরু হয়েছিলো টেলিগ্রাম এবং টেলিগ্রাফের মধ্যদিয়ে। এমন সময় ছিল মানুষ অনেক টাকা খরচ করে তাঁর যোগে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বার্তা পাঠাত। সে সময় এটা অনেক ব্যবহুল ছিল। তবে এ পদ্ধতি গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল প্রযুক্তির আগমন এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন। বর্তমানে মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরেও স্মার্টফোন সমূহ আরও অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। যেমন ইনস্ট্যান্ট বার্তা প্রেরণ, WhatsApp, নিম্বাজ, ভাইবার সহ আরও অনেক ফ্রি কলিং সার্ভিস। বর্তমানে শক্তিশালী ৩জী প্রযুক্তিতে স্মার্টফোন সমূহ দিয়ে গ্রাহকরা স্কাইপ ভিডিও কল করতে পারছেন। ফলে সারা বিশ্বব্যাপী সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
সম্পূর্ণ নির্ভরশীলতাঃ মানুষ যতই স্মার্টফোনের সাথে পরিচিত হচ্ছে ততই তাঁরা অবাক হচ্ছে এবং তাঁদের জীবন অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে, যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মাত্রা। ফলে ধীরে ধীরে মানুষ স্মার্টফোনের সাথে অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। এটি ব্যাপার লক্ষণীয় তৃতীয় বিশ্বের দেশ সমূহে বেশীরভাগ মানুষ ইন্টারনেটের সাথে পরিচিত হন স্মার্টফোনের মাধ্যমে। জরীপে দেখা যায় ৭৮% স্মার্টফোন ব্যাবহারকারী হচ্ছে কিশোর কিশোরীরা। ৫৪% ব্যবহারকারী তাঁদের স্মার্টফোন ব্যবহার করেন ঘুমোতে যাওয়ার আগে বিছানায় শুয়ে। ৪০% ব্যবহারকারী তাঁদের স্মার্টফোনটি টয়লেটে গেলেও সাথে করে নিয়ে যান। অনেকে অবশ্য স্মার্টফোনের এমন ব্যাবহারকে নেশার সাথে তুলনা করেছেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন স্মার্টফোন নতুন প্রজন্মকে কর্মহীন করে তুলছে।
স্মার্টফোন বাস্তবিক অর্থে পৃথিবীর অনেক কিছুরই পরিবর্তন করেছে। একথা নিশ্চিত যে সামনের দিন গুলতে স্মার্টফোন আরও অনেক নিত্য নতুন সুযোগ সুবিধা নিয়ে আসবে এবং জীবন কে আরও সুন্দর, সহজ ও বৈচিত্র্যময় করে তুলবে।