দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের অনেকেরই জানা নেই যে পেন্সিলের আবিষ্কার কবে কখন হয়েছিলো? আজ এই বিষয়টি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রতিবেদন। তাহলে আসুন এই বিষয়ে জেনে নিন।
বলা যায় ইংল্যান্ডে ১৭৯০ সাল থেকেই পেন্সিলের রাজত্ব শুরু। বোরোডেল কয়লার খনি হতে গ্রাফাইট ধীরে ধীরে নি:শেষ হয়ে যাচ্ছিল। ১৭৯৩ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ব্রিটেন। তবে তখন সময়টা চলছিল নেপোলিয়নের। যুদ্ধে কেবলমাত্র জয়ী হতে পারলেই সমগ্র পৃথিবীর রূপ পালটে যাবে। তখন পেন্সিল ইন্ডাস্ট্রির ধস নামতে শুরু করলো ধীরে ধীরে।
যুদ্ধের একেবারে শেষের দিকে ইংল্যান্ড ফ্রান্সের ওপর একটি বোঝা চাপিয়ে দিলো। আর সেটি হলো ইংল্যান্ডে ফ্রান্স হতে পেন্সিল আমদানী করতে হবে এবং সেই বাজারে ইংল্যান্ডই হবে মূখ্য বাজার। যদিও এটি সামরিক কিছু প্রয়োজন মেটাতে চালু করা হয়, তবে ইংল্যান্ডের বাণিজ্যে কিছু খারাপ দিকও প্রদর্শিত হয়। ফ্রান্স হঠাৎ করে পেন্সিল এবং গ্রাফাইটের সংকটে ভুগতে থাকে।
এই সময় ফ্রান্সের যুদ্ধমন্ত্রী লাযারে কার্নো দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী এবং সামরিক বাহিনীর কমান্ডার নিকোলা জ্যাকুইস কোঁৎ-কে এই বিষয় নিয়ে কিছু করবার জন্য অনুরোধ করেন।
ওই সময় কোঁৎ সামরিক বাহিনীর জন্য তৈরি একটি বেলুনের গবেষণায় মগ্ন ছিলেন। এই গবেষণার জন্য তাকে তার বাঁ চোখ হারাতে হয়েছিলো একটি বিস্ফোরণে। বেলুন গবেষণা বাদ দিয়ে কোঁৎ এবার পেন্সিল এবং গ্রাফাইটের সমস্যার দিকে মন দিলেন। তাকে এমন একটি সমস্যার সমাধান করতে হবে যাতে করে ফ্রান্স গ্রাফাইট এবং পেন্সিলের এই সমস্যা থেকে মুক্তি পায়।
তখন কোঁৎ যে উপাদান দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করছিলেন তা হলো মাটি হতে প্রাপ্ত গ্রাফাইট এবং কাদামাটি। তিনি এই উপাদান দুটিকে পানির সঙ্গে মিশিয়ে একটি মিক্সার তৈরি করেন এবং তা আগুনে তাপ দেন। তিনি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলেন যে, তিনি এই মিক্সারের রঙ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন তিনি নিজেই। এটা নির্ভর করে তিনি কতোটুকু কাদামাটি এটিতে ব্যবহার করছেন। তারপর তিনি কিভাবে নরম গ্রাফাইটের মিশ্রণের সাহায্যে পেন্সিলের কালির রং গাঢ় বা হালকা করতে পারেন, তা নিয়ে তিনি গবেষণা করেন।
১৭৯৫ সালে কোঁৎ এর আবিষ্কৃত এই পেন্সিলের পেটেন্ট নেওয়া হয়। ইংল্যান্ডে যখন পেন্সিল নিয়ে চরম উন্মাদনা চলছিলো, প্রস্তুতকারকরা তখন কোঁৎ এর পেন্সিলের ফর্মূলাকেই আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন।
বলা যায় বর্তমান যুগের মানুষ কোঁৎ এর কাছে সত্যিই ঋণী। তিনি আবিষ্কার না করলে হয়তো আজকের যুগের মানুষ লেখাপড়া বা অন্যান্য কাজের জন্য পেন্সিল পেতোই না।