দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পরিপাটি পোশাক একজন মানুষের সুরুচির বহিঃপ্রকাশ। সুন্দর পোশাক পরিধান করতে কেনা চায়? কিন্তু সেই পরিপাটি বা সুরুচি বজায় রাখতে গেলে প্রয়োজন কাপড় ইস্ত্রি করা। কাপড় ইস্ত্রি করার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে সেটি নিয়েই এই প্রতিবেদন।
একটু গুছিয়ে নিজেকে সকলের কাছে তুলে ধরতে সবাই পছন্দ করে, আর নিজেকে সকলের কাছে উপস্থাপন করার সবথেকে প্রধান মাধ্যম হলো পোশাক বা জামা-কাপড়।
আমরা সব সময় পোশাক পরিপাটি ও সুন্দর রাখতে চাই। আর আমাদের পোশাক পরিপাটি রাখার জন্য আমরা আমাদের পোশাক ইস্ত্রি করে থাকি। কারণ পোশাক সুন্দর করে পরিপাটি করে গুছিয়ে না পরলে পোশাকের সৌন্দর্যের পরিপূর্ণতা পায় না। আপনার পোশাক যতই পরিষ্কার হোক না কেন তা যদি অগোছালো থাকে তাহলে পোশাকের সঠিক উজ্জ্বলতা প্রকাশ পায় না। আপনি যে পোশাকই পরুন না কেন, তা যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি হয় সেদিকে আপনাকে লক্ষ রাখতে হবে।
পোশাক ভালো করে পরিষ্কার করলেই চলবেনা পোশাকের সঠিক নান্দনিকতা বাড়ানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই পোশাক ইস্ত্রি করাতে হবে। এই ইস্ত্রি করার কতগুল নিয়ম রয়েছে আর এই নিয়মগুলো মেনে কাজ করলে আপনার কাপড়ের মান থাকবে অটুট আর কাপড় থাকবে দীর্ঘ দিন যাবত নতুনের তালিকায়। অন্যথায় ভুল নিয়মের কারনে আপনি হারাতে পারেন আপনার পছন্দের পোশাকটি। অতএব আমরা সকলেই সঠিক নিয়মে আমাদের পোশাক ইস্ত্রি করবো। তাহলে আসুন জেনে নেই– কাপড় ইস্ত্রি করার সময়ে যেই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
(১) আমরা কখনোই আমাদের পোশাক খালি মেঝেতে ইস্ত্রি করবো না। পোশাক টেবিলে ইস্ত্রি করতে পারেন। টেবিল না থাকলে মেঝেতে কাঁথা বিছিয়ে তার উপর সুতির মোটা কাপড় বিছিয়ে ইস্ত্রি করুন। এতে করে আপনার কাপড় পুড়ে যাওয়ার আশংকা থেকে অনেক ক্ষেত্রে পরিত্রাণ পাবে।
(২) কাপড় আয়রণ করার সময় কাপড়ের উপর একটু পারফিউম ছিটিয়ে নিয়ে আয়রণ করুন। এতে ওই গন্ধ অনেকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে এবং গায়ে সরাসরি পারফিউম ব্যবহারের ঝামেলা থেকেও রক্ষা পাবেন। যাদের বডি স্প্রে বা পারফিউম সরাসরি গায়ে ব্যবহার করলে এলার্জি কিংবা অন্যান্য সমস্যা হয়, তারা এই ব্যবস্থা অবলম্বন করতে পারেন।
(৩) কাপড় ইস্ত্রি করার আগে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনার কাপড় সিল্ক,সুতি,লিনেন,জর্জেট,অর্থাৎ কোন ধরনের কাপড় ইস্ত্রি করছেন। সাধারণত ইস্ত্রির গায়েই কাপড়ের ধরন অনুযায়ী কত তাপমাত্রা প্রয়োজন তা লেখা থাকে।কাপড়ের ধরন বুঝে ইস্ত্রির তাপমাত্রা নির্ধারণ করুন এবং ইস্ত্রি করুন।
(৪) কুশন উল্টো করে ইস্ত্রি করুন। টেবিল ম্যাটে মনোগ্রাম থাকলে উল্টো দিক থেকে ইস্ত্রি করুন।
(৫) আমরা অনেক ক্ষেত্রে ব্লক, হ্যান্ডপেইন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্ট ইস্ত্রি করার পর তার রঙ নষ্ট করে ফেলি। এক্ষেত্রে কাপড় উল্টো দিক থেকে ইস্ত্রি করুন। তাহলে কাপড়ের রঙ নষ্ট হবে না।
(৬) চকচকে মসৃণ সার্টিন বা ক্র্যাপজাতীয় কাপড় সব সময় অন্য আরেকটি হাল্কা ভেজা সূতি কাপড়ের ভাঁজের মধ্যে রাখুন তারপর ইস্ত্রি করুন। এতে করে আপনার কাপড়ের ক্ষতির ঝুকি কমে যাবে।
(৭) ব্লাউজ বা শার্ট ইস্ত্রি করার সময় প্রথমে হাতা ও কলার তারপর বাকিটুকু ইস্ত্রি করুন।
(৮) আমরা অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষ করি আমাদের সূতি কাপড়ের রঙ নষ্ট হয়ে যায় ইস্ত্রি করার জন্য, এর প্রধান কারণ হলো খুব গরম ইস্ত্রি দিয়ে ইস্ত্রি করা। উল্টো দিকে আয়রণ করুন এবং তুলে রাখার আগে আয়রণ করার সময় যদি পানি ব্যবহার করে থাকেন, তবে তা বাতাসে শুকিয়ে নিন।
(৯) অনেকেই কাপড় ইস্ত্রি করার সময়ে কাপড় পুড়িয়ে ফেলেন। এক্ষেত্রে কাপড় ইস্ত্রি করার পূর্বে কাপড়ে অ্যারারুট কিংবা মাড় দেওয়া পানি ছিটিয়ে ইস্ত্রি করুন।
(১০) কাপড় ইস্ত্রি করা শেষ হলে তা সাথে সাথে আমরা আলমারিতে রাখবো না। ইস্ত্রি শেষে কাপড় ঘণ্টা খানেক বাইরে বাতাসে রাখুন তারপর আলমারি অথবা নির্ধারিত স্থানে রাখুন।
মনে রাখবেন আমরা যে পোশাকি পরিনা কেনো তা যেনো হয় মনোমুগ্ধকর আর পরিপাটি। আর এই কারণেই কাপড় পরিস্কারের পর তা ভালো করে ইস্ত্রি করুন।