দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই এমন খবর যে কাওকে বিস্মিত করবে তাতে সন্দেহ নেই। কারণ এমন একটি গ্রামের খোঁজ পাওয়া গেছে যে গ্রামের সবাই দৃষ্টিহীন! অর্থাৎ শুধু মানুষই নয় ওই গ্রামটি পশু-পাখিও নাকি দৃষ্টিহীন!
আমরা বিভিন্ন সময় অনেক রকম অদ্ভুত গ্রামের নাম ও কাহিনী শুনেছি। কিন্তু তাই বলে এমন এক গ্রামের কথা শোনা গেলো যে গ্রামের সবাই অন্ধ অর্থাৎ দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো শুধু গ্রামের মানুষ অন্ধ তাই নয়, ওই গ্রামটি প্রাণীকূল অর্থাৎ পশু-পাখিও নাকি অন্ধ!এই বিশ্বেরই এক প্রান্তে এমন একটি গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামের সব মানুষ দৃষ্টিহীন! এই গ্রামটির নাম টিলটেপেক। মেক্সিকোর ঘন অরণ্যের মধ্যে ছোট্ট একটি গ্রাম হলো এই টিলটেপেক গ্রাম। সেই গ্রামে বসবাস করে জাপোটেক জাতির প্রায় ৩শ’ মানুষ। শুনতে অবাক লাগলেও এটিই বাস্তব সত্যি যে, গ্রামটির প্রতিটি মানুষ যেমন দৃষ্টিহীন, তেমনি দৃষ্টিহীন গ্রামের পোষ্য প্রাণীও!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, এই গ্রামেই রয়েছে লাবজুয়েলা নামে একটি গাছ। এই গাছটিকে অভিশপ্ত মনে করে গ্রামবাসী। তাদের বিশ্বাস যে, তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিয়েছে ওই লাবজুয়েলা গাছই। এমনও দাবি করেন গ্রামটির অভিবাসীরা। এই গ্রামে যেসব বাচ্চা জন্মায়, শুরুতে অন্য ৫টা নবজাতকের মতোই সুস্থ-সবল হয়ে থাকে। তবে এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে বাচ্চারা।
কেনোই বা ওই গ্রামের মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছে, একপর্যায়ে তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন এবং বিজ্ঞানীরা তদন্ত শুরু করে দেন। লাবজুয়েলা গাছের যে গল্প গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে তা নিয়েও তদন্ত করেন গবেষকরা। তবে দেখা যায়, ওই গাছের সঙ্গে এদের দৃষ্টিহীনতার কোনও রকম সম্পর্কই নেই!
বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পারেন যে, এই ঘন অরণ্যে রয়েছে ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’ নামে এক প্রকার বিষাক্ত মাছি। যা এই টিলটেপেক গ্রামে প্রচুর সংখ্যায় দেখা যায়। এই বিষাক্ত মাছির কামড়ের জীবাণু সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। সে কারণেই শিশু থেকে বুড়ো, এমনকি পশুরাও ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে এই গ্রামটির।
মেক্সিকো সরকার যখন এই গ্রাম সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন বাসিন্দাদের অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেন। তবে সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। কারণ গ্রামের মানুষগুলো এর পরও ভিটেমাটি ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে নারাজ। আর কি করা সরকার শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীদের। তাই তারা শেষ পর্যন্ত অন্ধ হয়েই রয়ে গেছেন এই টিলটেপেক গ্রামটিতে! তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার।