দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিয়ের পর মাথায় সিঁদু পরে সংসদে গিয়ে শপথ নেন তৃণমূল সাংসদ এবং ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। তারপর হতেই তার বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হয়।
হিন্দু ছেলেকে বিয়ে, মাথায় সিঁদুর, গলায় মঙ্গলসূত্র- কোনোটাই ভালোভাবে নেইনি জনগণ। তবে কোনোদিনই সেসব তোয়াক্কা করেননি নুসরাত জাহান। বিয়ের পর থেকে কখনও কখনও রথযাত্রা, কখনও রাখি সবকিছুতেই দেখা গেছে নুসরাতকে। চলতি বছর দুর্গা পূজায় অঞ্জলি দেওয়া নিয়ে আবারও সমালোচনার মুখেন এই অভিনেত্রী।
ভারতীয় বেশ কয়েকজন ইমাম বলেছেন যে, নুসরাতের মুসলিম থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং নিজের ধর্ম পাল্টে ফেলাই উচিত নুসরাতের। দুর্গা পূজায় অংশ নিয়ে অঞ্জলি দেওয়ায় নুসরাতের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন হুজুররা।
ইমামদের দাবি হলো, এতে করে ইসলামের বদনাম করা হচ্ছে। তাঁরা বলেছেন, ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও সামনে প্রার্থনা করার অনুমতি ইসলাম দেয় না। কোনো মুসলিম ধর্মাবলম্বী অন্য ধর্মের হয়ে উপাসনা করতে পারে না। সেটা করতে হলে তাকে ধর্ম ত্যাগ করতে হবে। ইমামদের এমন মন্তব্যের জবাব দিতে সরব হয়েছেন বিতর্কিত নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
বিতর্কিত এই লেখিকা বরাবরই বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। এর আগেও নুসরাতের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে তসলিমাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। তবে এবার নুসরাতকে সমর্থন করার পাশাপাশি তিনি খোঁচা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কেও। তার হিজাব পরার বিষয় নিয়েও আক্রমণ করেছেন তসলিমা নাসরিন।
এক টুইট বার্তায় তসলিমা নাসরিন লিখছেন যে, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন অ-মুসলিম হয়ে অন্যান্য মুসলিমদের মতো হিজাব পরেন এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন তখন ইমামরা তাকে বলেন তিনি নিরপেক্ষ। নুসরাত জাহান যখন হিন্দু না হয়েও অন্যান্য হিন্দুদের মতো পূজা মণ্ডপে গিয়ে প্রার্থনা করেন তখন তাকে ইমামরা বলেন যে সে অ-মুসলিম।
অষ্টামীর সকালে শহরের একটি মণ্ডপে গিয়ে স্বামী নিখিল জৈনের সঙ্গে একসঙ্গে অঞ্জলি দিতে দেখা যায় নুসরাতকে। লাল-শাড়ি পরে ঢাকের তালে নাচ-গানও করেছেন নুসরাত। মুহূর্তেই সেই ছবি ভাইরাল হয়ে গেছে। এই বিষয়ে নুসরাত জাহান বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার জন্যই আমি দুর্গার সামনে প্রার্থনা করেছি। এভাবে আমি সব সময় ধর্মের সঙ্গে সম্প্রীতির বার্তাও দিয়েছি।