দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে গাছ এর কোন বিকল্প নাই। মানব সভ্যতা বজায় রাখা, পরিবেশের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করা ও পরিবেশকে উজাড় করে সর্বস্ব প্রদান করা এই গাছ আমাদের কতই না উপকার করে থাকে।
কিন্তু তাদের এই উপকারের বিপরীতে আমরা কি পারছি তাদেরকে সবটুকু ফিরিয়ে দিতে? আমরা সকলে জানি গাছ থাকা অনেক ভালো কিন্তু আমরা কি গাছের সঠিক পরিচর্যা ও গাছ রক্ষার্থে বনভূমি রক্ষার্থে কোন প্রকার অবদান রাখতে পারছি? সম্প্রতি উজাড় হয়ে যাচ্ছে বন জঙ্গল। সম্প্রতি পুড়ে ছাই হয়ে গেল আমাজন। এখন গাছের পরিচর্যা করার ব্যাপারটা তো দূরের কথা সম্প্রতি গাছ বাঁচানো হয়েছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য। একটা সময় অতীব হারে গাছের বৃদ্ধির ফলে মানব সভ্যতা ও জীবন ছিল ঝুঁকিময়। কারণ বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ তখন অতিমাত্রায় ছিল যার ফলে পৃথিবীজুড়ে দাবানলের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। যদি ঐ পরিমাণ অক্সিজেনের মাত্রা যদি এখনও অব্যাহত থাকত তাহলে জীবাশ্ম টিকে থাকা মুশকিল হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানের অবস্থা প্রমাণ করছে অন্যকথা।
বর্তমানে পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষের জন্য গাছের সংখ্যা প্রায় ৪২২টি করে আছে যা খুবই ভয়াবহ একটি পরিসংখ্যান প্রদর্শন করছে আমাদের সামনে। ২০১৫ সালের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা থেকে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। বর্তমানে আমাদের পৃথিবীতে মোট গাছের সংখ্যা তিনটি ট্রিলিয়নের এর একটু বেশি। পৃথিবীর প্রত্যেকটি মহাদেশেই সব ধরনের গাছ আছে এমন এলাকাকে চার লাখে ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এ সকল প্রকার ছবি স্যাটেলাইট দ্বারা সংগ্রহ করা হয়। এই গবেষণাটি ছিল খুবই জটিল এবং কঠিন। এমন কঠিন কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে সুপার কম্পিউটার এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবস্থা। সম্প্রতি এমন গবেষণা দ্বারা জানা যায় যে বর্তমানে আমরা গাছ নিধন করে চলেছি বছরে ১৫ বিলিয়ন যা প্রতিবছরের একটি পরিসংখ্যান। নানাবিধ গবেষণা আরো প্রকাশ পায় যে গাছ বেশি গ্রীষ্মকালীন অঞ্চলে দেখা গেলেও গাছের ঘনত্ব বেশি ঠান্ডা অঞ্চলে। উত্তর আমেরিকা, রাশিয়া সংলগ্ন অঞ্চলগুলোতে গাছের সংখ্যা প্রায় ৭৫০ বিলিয়ন। তবে মেরু অঞ্চলে এর ঘনত্ব প্রতি মিটারে মাত্র একটি করে।
পৃথিবীর সকল বৃহৎ দেশ গুলোর তুলনায় ছোট ছোট দেশগুলোতে গাছের পরিমাণ বেশি। সেক্ষেত্রে আফ্রিকার ছোট দেশগুলোর মধ্যে সুরিনাম নামক দেশটি উল্লেখযোগ্য। এ দেশে প্রায় ৯৮ দশমিক ৩ শতাংশ অঞ্চলেই গভীর অরণ্য। সে ক্ষেত্রে দেশটির আদিবাসীরা তাদের এই বন সুরক্ষার ক্ষেত্রে সকল প্রকার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে এবং রাজনৈতিকভাবেও তারা খুবই সোচ্চার। এই গাছের পরিমানের তালিকায় এশিয়ার মধ্যে একটি মাত্র দেশ লাওস যেখানে পাওয়া যায় গাছে ঢাকা কিছু বিশাল অরণ্য। এদেশের প্রায় ৮২ শতাংশই অরণ্য ঢাকা।
উপরক্ত আলোচনা থেকে খুব সহজেই আন্দাজ করা সম্ভব যে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে পাশাপাশি গাছের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে লক্ষণীয় হরে। আমাদের পৃথিবীর রক্ষার্থে ও দুর্যোগ থেকে প্রতিকার পেতে গাছের মাত্রা বৃদ্ধি আমাদের সকলের জন্য অবশ্যকীয়। আমাদের পরিবেশ ,পৃথিবী ও সকল জীবকে রক্ষা করার জন্য গাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যার্থে সকলকে কাজ করে যেতে হবে।