দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের এই ছোট্ট দেশটির অর্জন কোন অংশে কম নয় তা প্রমাণ করা হয় ২০১৮ সালের ১১ মে বঙ্গবন্ধু- ১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দ্বারা। এবার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২ উৎক্ষেপণে সহযোগিতা করবে রাশিয়া।
তথ্যপ্রযুক্তি ও আধুনিকায়নের যুগে পৃথিবীর সকল ক্ষমতাশীল দেশ ও আধুনিক শহর গুলো তাদের নিজস্ব তৈরি নানাবিধ আবিষ্কার সমূহ দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ক্রমান্বয়ে। আমাদের এই ছোট্ট দেশটির অর্জন কোন অংশে কম নয় তা প্রমাণ করা হয় ২০১৮ সালের ১১ মে বঙ্গবন্ধু- ১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দ্বারা। আমাদের দেশের সাফল্য অর্জনের মাঝে এটি একটি অন্যতম মাইলফলক অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছি। সাফল্যের সাথে বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরবর্তী ধাপে আমরা এটিকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছি। এখন সময় হলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দুই নিয়ে চিন্তা করা যা ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন ও পরিকল্পনা করা শুরু হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ২ উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে কারিগরিক ভাবে সাহায্য করবে রাশিয়া।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে কারিগর ও আর্থিকভাবে সহায়তা দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বার্তা প্রকাশ করেছে রাশিয়া। ২৯ অক্টোবর রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার আই ইগনাতভ এক বৈঠকে তার দেয়া বিবৃতিতে বর্তমান টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এর কাছে তাদের এই আগ্রহ কথা ও তথ্য প্রকাশ করেন। আমাদের বাংলাদেশকে ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল কার্যক্রমকে আরো গতিশীলতা প্রদান করতে তারা আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে বলে জানান এই রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। রাশিয়া বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ এর উন্নয়ন খাতে কারিগরি ও প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা পালন করবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এর কার্যকরী ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে রাশিয়া তাদের প্রত্যক্ষ আগ্রহ প্রকাশকারী বৈঠকে রাশিয়ার স্যাটেলাইট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমসর এর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিল। রাশিয়ার প্রতিনিধি দল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর কার্যকরী ভূমিকা পালন করা দল ছাড়াও টেলিটক বাংলাদেশের যোগাযোগের অন্যান্য বিনিয়োগ ক্ষাতে যুক্ত হওয়ার প্রতি তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উক্ত বৈঠকে রাশিয়ার স্যাটেলাইট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমসর এর পাঁচ সিনিয়র কর্মকর্তা ভিতালি সাফোনভ, সার্জে বারাইকিন, আলেকজেন্ডার কাসনিন, কিরিল প্লতনিকভ অংশ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের টেলিকম ও ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আধুনিকতর স্থানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাশিয়া সহযোগিতার এক বিশাল সুযোগ রয়েছে বলে বক্তব্য পেশ করেন মোস্তফা জব্বার। তিনি তার বিবৃতিতে রাশিয়াকে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু বলে উল্লেখ করেন।
আমাদের দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিনিয়োগবান্ধব নীতির ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা খুবই লাভজনক ও অত্যন্ত সুবিধা মূলক। সরকারের নানাবিধ বিনিয়োগবান্ধব নীতিসমূহ কে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি টেলিকম প্রযুক্তি উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করে বলেন বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে রাশিয়া বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে নিজেদের মনোনিবেশ করেছেন। নানাবিধ বিবৃতি ও তথ্যের উপর ভিত্তি করে জানা যায় ২০২৩ সালের মধ্যেই মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ এর কাজ শুরু হয়ে যাবে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ২ তে কি কি থাকা উচিত এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর লাইফ টাইম মাথায় রেখে এটিকে দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা চলছে বলেও জানা যায়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ যত সম্ভব ত্রুটিমুক্ত ও সংগতিপূর্ণ ভাবে তৈরি করা হবে। বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ২ এর সঠিক চাহিদা মেটানোর উপযোগী করতে কাজ করে চলেছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর সার্থক উৎক্ষেপণের পর যারা স্যাটেলাইটের সেবা নিতে আগ্রহী তারা সবসময় তাদের সেবার বিকল্প কিছু দাবি করেন বা বিকল্প কিছুর জন্য চাহিদা প্রকাশ করেন। ঠিক সেই চাহিদা পূরণের তাগিদে দুর্যোগকালীন যেন বিকল্প সেবা দেওয়া সম্ভব হয় সেটা মাথায় রেখেই দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে মনে করেন বিজ্ঞজনেরা। নিরবিচ্ছিন্নভাবে স্যাটেলাইটের সেবা প্রদান করার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২ মহাকাশে পাঠানো হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন সকলেই। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২ মহাকাশে পাঠানো হলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ ও ২ উভয়ের এর ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকভাবে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে কয়েকগুণ।