দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চাঁদ ও মঙ্গলের বুকে ঘরবাড়ি বানানোর লক্ষ্যে বিজ্ঞানীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল তোড়জোড়। তবে সেটি ইট, সিমেন্ট ও বালু দিয়ে নয়, এসব বাড়ি বানানো হবে আসলে ছত্রাক দিয়ে!
এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, ছত্রাকের মূল অংশ ‘মাইসেলিয়া’কেই এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কাজে লাগানো হবে। ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারে ‘মাইকো-আর্কিটেকচার প্রজেক্টে’র প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর লিন রথসচাইল্ড সম্প্রতি নাসার ওয়েবসাইটে এসব তথ্য দিয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে গড়ে তোলা সেই সব বাড়িতে শুধু মানুষই থাকবে, তা কিন্তু নয়। থাকবে ‘সায়ানোব্যাকটেরিয়া’ জাতের বিভিন্ন ধরনের অণুজীবও! এরা বাঁচার প্রয়োজনেই শুষে নেবে সৌরশক্তি, যা দিয়ে পানি এবং বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে বদলে দেয় নিজেদের খাবার এবং অক্সিজেনে। বায়ুমণ্ডলহীন চাঁদ এবং মঙ্গলের বুকে আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের বাতাস হয়ে উঠবে ওই অক্সিজেনেই। পানি এবং বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ভেঙে এসব অণুজীব বানাতে পারে আরও কিছু পদার্থ, যা খেয়ে মানুষ সেখানে বেঁচে থাকতে পারবে। পৃথিবীর বাইরে আমাদের বসতি বানাতে ধাতুর ব্যবহার যতো কম করা যাবে, সে কথা মাথায় রেখেই এবার কাজ করছে নাসা। সে লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে এবার ছত্রাক নিয়ে কাজ।
লিন রথসচাইল্ড জানিয়েছে, চাঁদে এবং মঙ্গল গ্রহে নিয়ে যাওয়া হবে ছত্রাক, যা অসম্ভব হালকা একটি জিনিস। যে কারণে বহনের ব্যয়ও কমবে। সুদীর্ঘ পথ পেরোনোর সময়ও ছত্রাক মরে যাবে না। এমনকি এটি নিস্তেজও হয়ে পড়বে না। ছত্রাকের মাইসেলিয়ার বেড়ে ওঠার ক্ষমতা সত্যিই অসাধারণ। মঙ্গল গ্রহে ও চাঁদের অসম্ভব রুক্ষ পরিবেশে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এই ছত্রাকটি।
এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, চাঁদে ও মঙ্গল গ্রহের বুকে বাড়িগুলো হবে ত্রিস্তরবিশিষ্ট গম্বুজের মতোই। সবথেকে ওপরের স্তরে থাকবে জমাট বাঁধা বরফ। এটি অসম্ভব ক্ষতিকারক তীব্র বিকিরণের হাত হতে বসতিগুলোকে বাঁচাবে। এ থেকে গলে পড়া পানি পৌঁছে যাবে দ্বিতীয় স্তরে থাকা ছত্রাক এবং সায়ানোব্যাকটেরিয়া জাতের অণুজীবগুলোর কাছে। যারা সৌরশক্তি দিয়ে সেই পানিকে ভেঙে তাদের প্রয়োজনীয় খাবারদাবারও পাবে। অপরদিকে তৃতীয় স্তরে থাকা মাইসেলিয়াকেও রক্ষা করবে এটি, যা থেকে আবারও ছত্রাক গজাতে পারবে! তথ্য: সংবাদ মাধ্যম সূত্রের।