দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাড়িতে বসে কীভাবে অফিস করা যায় সেই পরিকল্পনা হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত। তবে সেটি কোনোভাবেই বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছিল না। এটা শুধু পরিকল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এবার বাড়িতে বসে অফিস করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে চলেছে!
চীনে করোনা ভাইরাস মহামারী রূপ নেওয়ার পর পরিকল্পনাটি যেনো ‘শাপে বর’ হয়ে দেখা দিয়েছে। চীনের অনেক সংস্থাই বাড়িতে বসে কর্মীদের কাজ করার পক্ষে মতও দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীনের কারখানা, দোকান, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় কাজ বন্ধ হওয়ায় অনেক স্থান ভুতুরে শহরে পরিণত হয়েছে। ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ ব্যবসায়ী।
সমস্যা উত্তরণে ওই দেশের অনেক ব্যবসায়ী ঘরে বসেই ভার্চুয়াল জগতের মাধ্যমে কীভাবে কাজ করা যায় সেটি বের করার চেষ্টা করছেন।
এই বিষয়ে ৪০০ কর্মী নিয়ে কাজ করা ইন্টারপাবলিক গ্রুপের অংশীদার ও সাংহাইয়ের বিজ্ঞাপন সংস্থা ‘রেপ্রিজ ডিজিটাল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যালভিন ফু বলেছেন, ‘ ঘরে বসে কাজের পরীক্ষা করার এটা একটা ভালো সুযোগ এসেছে’। কাজটা সহজ না হলেও তার মতে প্রচুর ভিডিও কল ও চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে এই কাজটি করা যেতে পারে।
এই মুহূর্তে চীনের বেশিরভাগ মানুষ চীনা নববর্ষের ছুটিতেই রয়েছেন। তবে চীনা অনেক সংস্থায় অফিস পুরোদমে শুরু হওয়ার আগে বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম পরিষরে ঘরে বসে কাজ করার পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করতে চাইছে।
সংস্থাগুলো জানিয়েছে যে, ভিডিওচ্যাট অ্যাপ্লিকেশনগুলির মাধ্যমে তারা ক্লায়েন্ট মিটিং ও গ্রুপ আলোচনার আয়োজনের চেষ্টা করবে। সেই সঙ্গে ওয়েচ্যাট ওয়ার্ক কিংবা বাইট্যান্সের স্লেকের মতো সফ্টওয়্যার প্ল্যাটফর্মে উৎপাদনশীল বিভিন্ন বিষয়েও আলোচনা করবে বলে জানা যায়।
চীনের অর্থনীতির কেন্দ্র বিন্দু হং কং, সাহাংই ও অন্যান্য বড় বড় ব্যবসায়িক শহরে হাজারও কর্মীদের নিয়ে এই মডেল বাস্তবায়ন করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে ঘরে বসে অফিস করা নিয়ে বিতর্কেরও যেনো শেষ নেই। সবাই এই বিষয়ে এখনও একমত হতে পারেননি। কিছু ব্যবস্থাপকের ধারণা যে, বাড়িতে বসে কাজ করলে উৎপাদনশীলতা আরও কমে যাবে।
তবে এই ধারণার বিপরীত প্রমাণও রয়েছে। ২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিরতি এবং আরামদায়ক পরিবেশে বাড়িতে বসে কাজ করার জন্য চীনের ট্রাভেল এজেন্সীর কল সেন্টারের কর্মীদের উৎপাদনশীলতা আরও ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
৩০০ কর্মী নিয়ে কাজ করা চীনের কো-ওয়ার্কিং স্পেস এন্ড বেকারি বীপলাসের ডেপুটি পরিচালক ডেভ তাইইয়ের ধারণা মতে, বাড়িতে বসে কাজ করার বাস্তবায়ন কঠিন হবে। কারণ হলো তাদের সংস্থার কাজের যে ধারা সেটি বাড়িতে বসে করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। তার ভাষায়, অফিসের মতো অনলাইনের মাধ্যমে ক্রেতা-কর্মীদের মধ্যে সংযোগ রাখা প্রায় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
অনেক সংস্থা বলছে যে, বাড়িতে বসে অনলাইনে কাজ করা কোনো কোনো কাজের ক্ষেত্রে একটা সমাধান হতেই পারে। তবে এমন পরিকল্পনায় মোটেও সবার জন্য সুফল বয়ে আনবে সেটি কিন্তু বলা যাবে না।