দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে চীনফেরত নাগরিকদের সাইবেরিয়ায় রাখার জন্য ব্যবস্থা করেছে রাশিয়া। সেখানে অন্ততপক্ষে ১৪ দিন তারা কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।
গত মঙ্গলবার এই তথ্য দেয় মস্কো। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশে আটকে পড়া ১৩০ রুশ নাগরিককে ফিরিয়ে আনার জন্য দু’টি সামরিক বিমান পাঠানো হচ্ছে।
চীনফেরতদের পর্যবেক্ষণে রাখতে সাইবেরিয়ার তায়ুমেন এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রুশ উপ-প্রধানমন্ত্রী তাতিয়ানা গোলিকোভা। চীনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রায় ৪ হাজার ৩শ কিলোমিটার স্থলসীমান্ত বিদ্যমান।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার দু’জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এর উপদ্রব এড়াতে বেশ কিছু এলাকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সীমান্ত পারাপার। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন এবং বিমান চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। কোনও বিদেশীর শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেলে তাকে ফেরত পাঠানোর বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর হতে একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত মঙ্গলবার। এদিন প্রাণ হারান ৬৫ জন। যে কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২ জন। গতকাল চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আরও প্রায় ৩ হাজার ৮৮৭ জন। অর্থাৎ চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ২৪ হাজার ৩২৪ জন।
চীনের মূল ভূ-খণ্ডের বাইরে এ পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত দুইজন। মঙ্গলবার হংকংয়ে ৩৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি কিছুদিন পূর্বে করোনা ভাইরাসের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর হতে ফিরেছিলেন। ইতিপূর্বে গত সপ্তাহে ফিলিপাইনে মারা গেছেন উহানফেরত আরও একজন।
জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা প্রমোদতরীতে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ১০ জনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে ২৭৩ জন যাত্রীকে পরীক্ষা করার পর মাত্র ৩১টি ফলাফলের মধ্যে। প্রমোদতরীটিতে মোট যাত্রীর সংখ্যা ছিলো প্রায় ৩ হাজার ৭শ’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, চীনের বাইরে এ পর্যন্ত অন্তত ২৪টি দেশে ১৭৬ জন এই করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মাত্র ৮৯২ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।