দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘করোনা ভাইরাস’ কথাটি উচ্চারণ করলেই জেল! এমন একটি খবর সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনাটি এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তানের।
চীনের উহান হতে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এক অভিনব পদ্ধতি বের করেছে তুর্কমেনিস্তান সরকার। ‘করোনা ভাইরাস’ শব্দটিকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেখানে। কেও যদি এই শব্দটি মুখে নেয় বা কোথাও আলোচনা করে, গ্রেফতার হতে হবে তাকে। মাস্ক পরাকেও এই দেশটিতে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।
তুর্কমেনিস্তানের একনায়কতন্ত্রের জনক প্রেসিডেন্ট গুর্বাঙ্গুলি বার্ডি মুখামেদভ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্প্রতি এই ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও দেশটিতে এ পর্যন্ত একজনও করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। দেশটির পুলিশ প্রশাসন প্রেসিডেন্টের ঘোষণাটি ব্যাপক গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
ইউরোপভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম রেডিও লিবার্টি তাদের অনলাইন মাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়েছে যে, করোনা ভাইরাস নিয়ে যারা আলোচনা করছেন, পুলিশ তাদের গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে। মিডিয়াগুলোর মুখও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা কিংবা লেখালেখি দেশটিতে পুরোপুরি বন্ধ।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট তাদের প্রতিবেদনে বলেছে যে, দেশটিতে এখনও কোনো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর তথ্যই নেই, আগামীতেও যেনো না পাওয়া যায় সে চেষ্টাই করছেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশটির রেস্তোরাঁ, জিম, খেলাধুলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ছুটি দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ। বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে মাস্ক পরা।
বিশ্বগণমাধ্যম ধারণা করছে যে, তুর্কমেনিস্তানে অদ্বিতীয় শাসক প্রেসিডেন্ট গুর্বাঙ্গুলি বার্ডি মুখামেদভের কারণে দেশটি থেকে করোনা সম্পর্কিত কোনো তথ্যই বাইরে আসতে পারছেন না। তবে সেখানে যদি ভাইরাসটি প্রকোপ দেখানো শুরু করে, বিপর্যয় ঘটতে পারে বড় ধরনের। দেশটির নাগরিকগণও শিকার হতে পারেন মারাত্মক ঝুঁকির।
উল্লেখ্য, তুর্কমেনিস্তানের পাশের দেশই হলো ইরান। ইরানে আক্রান্ত রয়েছে মোট ৪৭ হাজার ৫৯৩ জন। মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৬ জন মানুষ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৪৭৩ জন। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে মারা গেছে প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। মোট আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ১০ লাখ মানুষ, আর সুস্থ হয়েছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।