দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারাদেশে ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সমন্বয়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার কাজে লাগানোর চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। এজন্য একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেইজ ও সফটওয়্যার তৈরির মাধ্যমে কাজগুলো করা হবে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ত্রাণ বিতরণে সামাজিক দূরত্ব মানা ও দ্রুততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সমন্বয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এ মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের মধ্যে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ওই আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে যোগ দেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দুটির জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, মো. শাহ কামাল এতে অংশ নেন।
এছাড়াও বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এর নির্বাহী পরিচালক, এটুআই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকসহ মন্ত্রণালয় দুটির কর্মকর্তারাও অনলাইনে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।
জানানো হয়েছে, একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেইজ তৈরি করে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগামী ৭ দিনের মধ্যে একটি সফটওয়্যার তৈরির পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৩৩৩ নম্বরকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বৈঠকে জানানো হয়েছে।
সেইসঙ্গে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সমন্বয় এবং দ্রুত করতে আরও কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন সেই বিষয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের মতামত দিয়েছেন।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ হতে জানানো হয় যে, এটুআই প্রোগ্রাম সারাদেশে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে উপকারভোগীদের একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেইজ তৈরির জন্য একটি সফটওয়ারও তৈরি করবে। যেখানে উপকারভোগীদের জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধন সনদ ও মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করা হবে। সেইসঙ্গে একটি কিউআর কোড পদ্ধতি ও মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এই দুর্যোগকালীন সময় জনগণের বৃহত্তর কল্যাণার্থে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ও প্রয়োজনীয় সকল সহযোগীতাও দেবে।
এই সময় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য ত্রাণ হিসেবে বিতরণের জন্য এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পরিবহন এবং বিতরণ নিশ্চিত করতে এটুআই এর একশপ প্লাটফরম ব্যবহারের জন্য তিনি দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।