দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট্ট একটা আণুবীক্ষণিক জীব হলো এই প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস। অদৃশ্য এই শত্রুর কাছে হেরে যাচ্ছে গোটা দুনিয়া। সেইসঙ্গে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে মানবজাতির সভ্যতা ও বিজ্ঞানের দম্ভও। করোনার থাবা থেকে সুরক্ষা পেতে বিমানে নিরাপদ দূরত্ব বাড়াতে আসছে বসার ব্যবস্থায় পরিবর্তন।
প্রাণঘাতি করোনার প্রভাবে পাল্টে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। তেমনিভাবে ভাইরাস পরবর্তী সময় বিশ্বে বিমানের ফ্লাইট সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিবর্তনও চোখে পড়ছে। কিছু এয়ারলাইন্স সামাজিক দূরত্ব মানতে বিমানের মাঝখানের সিট সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন। ইতালির একটি বিমান কোম্পানি বিমানের ইকোনমিক ক্লাসের কেবিনকে নতুনকরে নকশার এক অভিনব আইডিয়াও দিয়েছে।
এভিও ইন্টেরিওরস নামে একটি কোম্পানির ইতালীয় নকশাকাররা যাত্রীদের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে দুটি সিটের নকশা নমুনা হিসেবে দিয়েছেন। এতে বিমানে অতিরিক্ত জায়গা বা মাঝের সিট সরানোর প্রয়োজন হবে না বলেও জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে। এক সারিতে সেট করা হয়েছে তিন সিটের ‘জানুস’ আসন, যার মাঝেরটি ঠিক বিপরীতমুখী। প্রাচীন রোমান গড জানুসের নামানুসারেই এর নামকরণ করা হয়েছে।
পরিষ্কারভাবে বললে যা বোঝায়, প্রথমসারির প্রথম আসনটি একদিকে মুখ করানো থাকলেও মাঝেরটি বিপরীত দিকে ঘুরানো এবং তৃতীয়টিও আবার প্রথমটির মতোই হবে। এভাবে দ্বিতীয় সারির আসন ৩টি হবে প্রথমসারির বিপরীতমুখী।
এই আসনগুলো পরিষ্কার করাও সহজ হবে। এক আসন থেকে আরেক আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ দূরত্ব বজায় রেখে সর্বোচ্চ আইসোলেশনও নিশ্চিত হবে। একইভাবে প্রত্যেক আসনের মাঝে স্বচ্ছ পদার্থ দিয়ে তিন ধারে ব্যারিকেডও থাকবে। এতে করে এক যাত্রীর শ্বাস-প্রশ্বাস হতে অন্য যাত্রীও নিরাপদ থাকবেন। এভাবেই পুরো কেবিনে আগের মতোই আসন সংখ্যা ঠিক রাখতে অন্তত ৭ ইঞ্চি অতিরিক্ত জায়গার প্রয়োজন হবে। তা নাহলে আসন সংখ্যা কমাতে হবে।
এভিও ইন্টেরিওরসের আরেকটি প্রস্তাব হলো গ্লাসসেফ সিস্টেম, যেটি আগের আসন ঠিক রেখে প্রতিটি আসনকে সুরক্ষা কাচ দিয়ে ঘিরে দেওয়া। তবে উভয় প্রস্তাব সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলার সঠিক পদ্ধতি নয়।
সামাজিক দূরত্ব বিধি হল একজন থেকে আরেকজনের দূরত্ব হবে অন্তত ৬ ফুট কিংবা দুই মিটার। কাঁচের প্রাচীর দিয়ে পাশাপাশি বসা যাত্রীদের মধ্যে একটি নিরাপদ ব্যারিকেড তৈরির প্রচেষ্টা করা হয়েছে মাত্র।
এভিও ইন্টেরিওরস কোম্পানি সংবাদ মাধ্যমটিকে জানায়, বহু এয়ারলাইন্স কোম্পানি ইতিমধ্যেই আমাদের নকশা দুটি পছন্দও করেছে। ইতিমধ্যে জানুস ও গ্লাসসেফ নশকার ফটোটাইপ তৈরি করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং নকশা তৈরির কাজও চলছে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ৮ হতে ১১ মাস লেগে যাবে বলে মনে করছে ওই কোম্পানিটি।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।