ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কুকুর কামড় দেয় এমন ঘটনা নতুন নয়, কিন্তু আস্ত ছাগল খেয়ে ফেলে এমন ঘটনা মনে হয় বিরল। ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামে। ৬০টি ছাগল-ভেড়া খেয়ে ফেলেছে কুকুর। যে কারণে ভয়ে শিশুদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অভিভাবকরা।
জানা গেছে, হিংস্র কুকুরের এহেন কাণ্ডে শিশুদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল পিপুলবাড়ী ও আরাজী পিপুলবাড়ী গ্রামে। আর ছোট শিশুদের কাটাতে হয় ঘরে বসে বন্দিজীবন। শুধু তাই নয়, পূর্ণ বয়স্ক শক্ত-সামর্থ্য মানুষও দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করতে বাধ্য হচ্ছে। কুকুরভীতির মূল কারণ গত দেড় মাসে ৩০-৩৫টি হিংস কুকুর প্রায় ৬০টি ছাগল-ভেড়া চোখের সামনে ছিন্নভিন্ন করে খেয়ে ফেলেছে। সুযোগ পেলে মানুষের ওপর হামলে পড়ে হায়েনার মতো।
খবরে প্রকাশ, এ অঞ্চলটি ভারতের সীমান্তঘেঁষা। এ দুই চর গ্রামে হিংস কুকুরের দল প্রথমে শিকারের অবস্থান জানতে পেরে অন্য কুকুরদের আহ্বান করে দলবদ্ধভাবে আক্রমণ করে মুহূর্তের মধ্যে শিকারকে টুকরো-টুকরো করে খেয়ে ফেলে। তাদের এ আচরণে এলাকার মানুষ নিজেদের এবং শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে আতংকে রয়েছে। অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। সমপ্রতি কুকুরগুলো নিধনের জন্য এলাকাবাসী যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল গফুরের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। পিপুলবাড়ী গ্রামের গোলজন বেগম জানান, চোখের সামনে একদল কুকুর তার দুটি ছাগল নিমিষেই খেয়ে ফেলে। একইভাবে কালাম ও শাহজাহানের তিনটি করে, কাঙাল, নওশাদ ও তারাচান্দের দুটি করে এবং মালেক, অপিয়াল, আয়নাল, জহিরুল, বাবুল, মহিমা, দুলাল, শুকুর, রফিকুলের একটি করে ছাগল অথবা ভেড়া কুকুরের পেটে গেছে। আরাজী পিপুলবাড়ী গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, গত ২৩ মার্চ মাইকিং করে কুকুর নিধনের চেষ্টা করেছে গ্রামবাসী। বিশাল চরাঞ্চল এবং পাশে ভারতের সীমান্তবর্তী একটি চর থাকায় কুকুরগুলো ধরা যাচ্ছে না। ওই এলাকায় কর্মরত এনজিও কর্মী শাহজাহান আলী বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে ভারতীয় গরু পারাপারের সময় মৃত গরুগুলো খেয়ে কুকুরগুলো মাংসাশি হয়ে উঠেছে। এখন করিডোর দিয়ে গরু পারাপার কমে যাওয়ায় হিংস্র কুকুরগুলো দুর্বল পশু ছাগল-ভেড়ার ওপর হামলা করছে। যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুল গফুর বলেন, কুকুরগুলো এরই মধ্যে ৬০টি ছাগল-ভেড়া খেয়ে ফেলেছে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুর রশীদ জানান, বন্য কুকুরের সঙ্গে মিশে গিয়ে স্থানীয় কুকুরগুলোর আচরণ বদলে যেতে পারে। তবে সাধারণত কুকুর পাগল হলে এ রকম অস্বাভাবিক আচরণ করে থাকে। তিনি জানান, এখন এগুলো নিধন ছাড়া বিকল্প নেই।