দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধাবস্থার অবসান কবে হবে তা নিয়ে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। তাহলে মোদির দোলনা-কূটনীতি কী শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলো?
ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতা কী তাহলে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না? বিরোধী নেতা থেকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ভারতীয় কূটনীতির সেই চেনা ধারটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর হতে বিভিন্ন মঞ্চে মোট ১৮ বার তার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কথাও হয়েছে। গত ৬ বছরে প্রধানমন্ত্রী মোদি একাধিকবার চীনও গেছেন। শি জিনপিংও ভারতে এসেছেন। গুজরাটে সবরমতী নদীর ধারে দুই নেতার দোলনায় বসে আলোচনার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। একে বলা হয়েছে যে, দোলনা-কূটনীতি। তামিলনাড়ুতে সমুদ্রের ধারে হেরিটেজ মন্দিরের পাশেও মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আলোচনা করেছেন।
এমনকি দুই দেশের শীর্ষনেতা কোনও রকম নির্ধারিত আলোচ্যসূচি ছাড়াও বৈঠক করেছেন। সাধারণত, দুই দেশের শীর্ষনেতা মিলিত হলে তার আগে কূটনীতিকরা প্রচুর পরিশ্রম করে আলোচ্য বিষয়গুলো ঠিক করেন। সেই আলোচনার একটা দিশাও থাকে। তবে সেই প্রথাও ভেঙেছেন নরেন্দ্র মোদি। চীনের ছবির মতো সুন্দর জায়গায় তারা আলোচ্যসূচি ছাড়াই কথাও বলেছেন। তখন সুষমা স্বরাজ ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই বৈঠকের পর লোকসভায় তিনি প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের কারণে। বলেছিলেন যে, সব কিছু ধরাবাঁধা ছকে ফেলা ঠিক না। এভাবে আলোচনা করলে এক দেশের অন্য দেশের প্রতি আস্থা আরও বাড়ে।
কূটনীতির ক্ষেত্রেও যে ছক ভাঙা যাবে না এমন কোনও দিব্যি দেওয়া যায় না। দুই নেতা একমত হলে সব নিয়ম ভাঙা যেতেই পারে। মোদি এর আগেও প্রথা ভেঙে নওয়াজ শরিফকে জন্মদিনের অভিনন্দন জানাবার জন্য বিদেশ হতে ফেরার পথে সোজা পাকিস্তানে গিয়ে হাজির হন। তখনও তার এই ছকভাঙা নীতির প্রশংসা হয়েছিল, তেমনই বিরোধীদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় তাকে। তবে বলা হচ্ছিল, কূটনীতিতে নতুন হাওয়া নিয়ে এসেছে নরেন্দ্র মোদির নীতি।
দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে মোদি নিয়ে আসেন জয়শঙ্করকে। তিনি সাবেক কূটনীতিক। বিশাল অভিজ্ঞতা তার। যে কারণে সংকটের সময় কী করতে হবে তা তার ভালো করেই জানা ছিলো।
এবার ভারত-চীন সীমান্ত সমস্যা এবং সংঘর্ষের পর ভারতের কূটনীতি নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। আসলে তাদের এই প্রশ্ন তোলার সুযোগটা এসেছে প্রথমে চীন ভারতের জমিদখল করেছে এই অভিযোগ ওঠার পরই এবং এরপর গালওয়ানে রক্তাক্ত সংঘর্ষের পর ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া নিয়েও। বিরোধীরা এটাকে বলছেন নিষ্ক্রিয়তা। এর শুরুটা করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। ২০ জন সেনার মৃত্যুর পর তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, কেনো এতোজন ভারতীয় সেনাকে প্রাণ দিতে হলো? চীন ভারতের কতোটা জমি দখল করে বসে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী জানান। রাহুল গান্ধীর প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রী দুই দিন পরে টুইট করলেন, এরপর কেনো তাতে চীনের নাম পর্যন্তও নিলেন না। এটা ভারতীয় সেনার অপমান ছাড়া কিছু নয়।
এমনিভাবে ভারতের রাজনীতিতেও চলছে নানা সমালোচনা। এতোগুলো সৈনিকের জীবন নিয়ে কী তাহলে খেলা হয়েছে? এমন প্রশ্নও উঠে এসেছে। তবে সব কথার এক কথা হলো কবে কখন চীনের সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে তার উপর নির্ভর করছে। কারণ এই সমস্যা এখন শুধু চীন-ভারত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নেই। ভারতের সীমান্তের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যেই নেপালের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু হয়ে গেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বরাবরই ঠেলাঠেলি বিদ্যমান। কেবলমাত্র বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সব সময় ভালো। তবুও বাংলাদেশের সঙ্গে যাতে সম্পর্ক ভালো থাকে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে ভারতকে। বাংলাদেশ সীমান্তে মাঝে মধ্যেই বিএসএফ গুলি করে নির্বিচারে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা করা হয়। এগুলো বন্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র কূননৈতিক শিষ্ঠাচার বজায় রাখলেই হবে না, এর সম্মানও দিতে হবে বাস্তবে। তা না হলে ভবিষ্যত কখনও ভালো হতে পারে না।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।