দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাজধানী ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ৪ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ মোট ২২ জন নিহত হন। এদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।
জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় আহত হন পুলিশের অনেক সদস্য। পরদিন অর্থাৎ ২ জুলাই সকালে সেনা কমান্ডোদের উদ্ধার অভিযানে ৫ জঙ্গি এবং ওই রেস্তোরাঁর একজন পাচক নিহত হন। এই অভিযানের মধ্যদিয়ে শেষ হয় সেই শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মি দশার। রেস্তোরাঁয় আটক আরেক কর্মী পরে হাসপাতালে মারা যান।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এবং নৃশংস জঙ্গি হামলায় হত্যা করা হয় ইতালির ৯ জন, জাপানের ৭ জন, ভারতীয় একজন ও বাংলাদেশী ৩ জন নাগরিকসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা।
হামলার চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ (১ জুলাই) সকাল হতে নিহতদের স্বজনরা শ্রদ্ধা জানাবেন। করোনা দুর্যোগের মধ্যে সীমিত পরিসারে শিডিউল মেনে জাপান, ইতালি এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতগণও শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন হলি আর্টিজানে।
কী ঘটেছিল সেই রাতে
গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের তীরে অবস্থিত হলি আর্টিজান বেকারির সবুজ লন ছিল বিদেশিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। রোজার ঈদের মাত্র এক সপ্তাহ আগে যেদিন ওই হামলা হয়েছিলো, সেদিন ছিল শুক্রবার। পিস্তল, সাব মেশিনগান ও ধারালো অস্ত্র হাতে ৫ তরুণ রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই ক্যাফেতে ঢুকে শুরু করে নৃশংসতা বর্বরতা।
গোলাগুলির খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান গুলশান থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্যরা। ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে রেস্তোরাঁর ভেতরে এলোপাতাড়ি গুলির খবর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে পুলিশের ওয়্যারলেসে।
থানা পুলিশ ছাড়াও র্যাব, সদ্য গঠিত কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ সব সদস্য ছুটে আসেন সেখানে। সবার দৃষ্টি চলে যায় এই রেস্তোরাঁর দিকে। সবাই তখন নিশ্চিত হয় এটা জঙ্গিদের হামলা।
রাতেই তাদের দমনে অভিযান চালাতে গিয়ে বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন এবং গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন অনেক পুলিশ সদস্যও।
এরপর কিছুটা পিছু হটে ওই বেকারি ঘিরে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে রাখেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রাতভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকের পর বৈঠক চালিয়ে যান।
তারপর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতিও দেয়। তাদের বরাত দিয়ে হামলাকারী ও সেখানে নিহতদের ছবিও তখন প্রকাশ করে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট সাইট ইন্টেলিজেন্স।
মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই হামলার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর শিরোনামে চলে আসে; তখনও অনেকেই হলি আর্টিজানের ভেতরে কার্যত জিম্মি হয়ে ছিলেন।
রুদ্ধশ্বাস রাত পেরিয়ে ভোরে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা নামে জঙ্গিদের দমন অভিযানে; ‘থান্ডারবোল্ট’ নামে সেই অভিযানে হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া জঙ্গি পাঁচ তরুণের সবাই মারা পড়ে। তখনই দেখা যায় যে, রাতে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে গলাকেটে হত্যা করেছিলো জঙ্গিরা। বেকারির ভেতর হতে ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়।
জঙ্গি নিহত ৫ জঙ্গি হলো- মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাজ ইসলাম, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল এবং খায়রুল ইসলাম পায়েল।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।