ডা: আব্দুল্লাহ আল মামুন ॥ ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যার জন্য আমরা এটিতে আক্রান্ত হলে বেশ পর্যুদস্তু হয়ে পড়ি। তবে যদি না ঘাবড়িয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলতে পারি, তাহলে আমরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবো।
ডায়াবেটিস শুধু শারীরিক রোগ নয়, এটি মনকেও গভীরভাবে আক্রান্ত করে। শুরুতেই যখন কাওকে জানানো হয় আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে যা আজীবন থাকবে এবং আপনাকে জীবন যাপন পরিবর্তন করাসহ ক্রমেই বেশি সংখ্যক ওষধ সেবন করতে হতে পারে। এই তথ্যগুলোই ডায়াবেটিস রোগীকে মানষিক চাপে বা মানষিক অবশাদে ফেলতে পারে।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে রোগের তীব্রতা ও মৃত্যু হার বেড়ে যায়। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে মৃত্যু হার অন্তত ৫ থেকে ৬ গুণ বেড়ে যায়। যাদের আগের থেকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ছিলো না তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বেশি।
ডায়াবেটিস রোগী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে রক্তের গ্লুকোজ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এই সময় ঘন ঘন গ্লুকোজ মেপে ওষুধ সমন্বয় করা দরকার। অনেকের ক্ষেত্রে নতুন করে ইনসুলিন শুরু করতে হতে পারে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজ কমেও যেতে পারে। তাই ঘন ঘন গ্লুকোজ মেপে ওষুধ ঠিক করে নিতে হবে।
১। ডায়াবেটিস সম্পর্কে ডাক্তার যত গাইড লাইন দিবে তা মেনে চলতে হবে।
২। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন সংরক্ষণ করতে হবে।
৩।মেডিকেশন অনুসরণ করতে হবে কারণ যদি আপনি কাছের ফার্মেসীতে ওষুধ না পান সেজন্য।
৪। মেডিক্যাল ডিভাইজগুলো সাথে রাখতে হবে। যেমন: ইনজেকশন, ষ্টিপ ইত্যাদি।
৫। সব মেডিকেশন যাতে হাতের কাছে পাওয়া যায় এমন কিছু করতে হবে যেনো আপনি অসুস্থ্য হয়ে গেলেও যাতে ঘরে বসে ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন।
৬। এক্সটা সরঞ্জাম রাখা লাগবে যেমন: রাবিং এলকোহল, হ্যান্ড সেনিটাইজার এবং সাবান। আপনার হাত সব সময় পরিষ্কার রাখার জন্য।
৭। হঠাৎ করে ব্লাডে গ্লুকোজ কমে গেলে ট্রিটমেন্ট করার জন্য হাতের কাছে সাধারণ সুগার রাখা লাগবে। যেমন: গ্লুকোজ ট্যাবলেট, শক্ত ক্যান্ডি, জুস ইত্যাদি।
৮। টাইপ-১ ডায়াবেটিস থাকলে হাতের কাছে কিটোন ষ্ট্রিপ রাখুন।
৯। কবে কবে আপনি অসুস্থ্য হয়েছেন বেশি সেই তারিখ টুকে রাখুন।
# ডা: আব্দুল্লাহ আল মামুন
এমবিবিএস, সিসিডি বারডেম
মেডিসিন এবং ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার
ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারনাল মেডিসিন
গুলশান ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঢাকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।