দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাভারের ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্মরণে একটি স্থায়ী শহীদ বেদি নির্মাণ করেছে সাতটি সংগঠন।
যেখানে শ্রমিক হত্যা-গুম সেখানেই শহীদ বেদী এই স্লোগানকে সামনে রেখে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে ভবন ধ্বসের ঘটনায় নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্মরণে একটি স্থায়ী শহীদ বেদি নির্মাণ করেছে সাতটি সংগঠন। দাবানল, গণমুক্তি গানের দল, ল্যাম্প পোস্ট, প্রপদ, মার্কসবাদের প্রথম পাঠ, ছাত্র গণমঞ্চ, ছাত্র যুব আন্দোলন-এ ৭টি সংগঠন পরে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন গতকাল ২ আগস্ট।
গতকাল সকালে এ স্থায়ী শহীদ বেদিটি নির্মাণ করা হয়। বেদির ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছে অনন্ত মোদক। পরে সকাল ১০টার দিকে বিপ্লবী শ্রমিক কমিটির ব্যানারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভার বের করা হয়। এ সময় মহাসড়কের এক পাশ কিছু সময়ের জন্য যানচলাচল বন্ধ ছিল। শহীদ বেদি নির্মাণ কমিটির সমন্বয়কারী আশিস কুড়াইয়ার সভাপতিত্বে পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, দাবানলের সুমন মৌত্রি, ল্যাম্পপোস্ট সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রিন্স আহম্মেদ, গণমুক্তির গানের দলের হাসান ফকরী, ছাত্র গণমঞ্চের শান্তুনু সুমন প্রমুখ।
বক্তারা শ্রমিক শ্রেণীর লড়াই সংগ্রামের ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক শহীদ বেদিকে প্রতিষ্ঠা ও রক্ষায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলাসহ নিখোঁজ শ্রমিকদের সঠিক তালিকা তৈরি করে নিহত ও নিখোঁজ শহীদ পরিবারকে ২০ লাখ টাকা, আহতদের ১০ লাখ টাকা, পঙ্গুত্ববরণকারীদের ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের দাবি জানান। শ্রমিকদের স্বার্থ পরিপন্থি সব কালা-কানুন বাতিলসহ যেসব কারখানায় শ্রমিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে সেসব মালিক ও জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আহত ও নিহত শ্রমিকদের কল্যাণে তহবিল গঠন করার দাবি জানান বক্তারা। এ সময় নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। অবিলম্বে তারা সংশ্লিষ্টদের প্রতি যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে রানা প্লাজা বহুতল ভবন ধসে পরে এক হাজার ১২৪ জন নিহত হয়। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন পোশাক শ্রমিক। ওই ভবনে ৫টি পোশাক কারখানা ছিল। ধসে পড়ার আগের দিন ভবনটিতে ফাটল দেখা দিলেও ভবন মালিক কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং শ্রমিকদের ওই ভবনে কাজ করার জন্য চাপ দেন।