দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মশাবাহিত রোগে প্রতি বছর সারাবিশ্বে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। বাংলাদেশেও প্রতি বছর গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মতো বিভিন্ন রকম মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। গবেষকরা বলছেন এবার মশা দিয়েই হবে মশা দমন!
মানুষের মাথাব্যথার বিষয় সামান্য এই মশা! এই মশার হাত হতে বাঁচতে ঘরে মশার স্প্রে প্রয়োগ, কয়েল জ্বালানো, ক্রিম ব্যবহার থেকে শুরু করে মশা দমনের জন্য মানুষ হাজার হাজার টাকা খরচ করে চললেও তাতে খুব একটা ফল হচ্ছে না। পুরোপুরিভাবে মশা দমন করতে ব্যর্থ মানবজাতি। তবে এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক জানিয়েছেন যে, তারা মশা না মেরে মশাবাহিত রোগ হতে মানুষজাতিকে রক্ষার এক অভিনব কৌশল আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে এসে গেছেন। রোগবাহী মশা যাতে নতুন করে প্রজনন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে নতুন বংশধর জন্ম দিতে না পারে সেজন্যই প্রজনন নিষ্ক্রিয় পুরুষ মশাকে কাজে লাগাতে হবে।
এই প্রক্রিয়ায় যদি সত্যি সত্যিই পর্যাপ্ত সংখ্যক নিষ্ক্রিয় পুরুষ মশাকে মশার প্রজনন ক্ষেত্রে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া যায় তাহলে মশার স্বাভাবিক প্রজনন প্রক্রিয়া সত্যিই ব্যাহত হবে। মশার প্রজনন ক্ষেত্রে থাকা প্রজননক্ষম পুরুষ মশারাও তখন খুব একটা বেশি ভূমিকা রাখতে পারে না। নিউ মেক্সিকো স্টেট ইউনিভার্সিটির ওই বিজ্ঞানীরা পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রক্রিয়ায় সাফল্য লাভ করলেও অনেকেই এর বাস্তবায়ন নিয়ে বেশ শঙ্কা প্রকাশ করছেন। কারণ হলো এই প্রক্রিয়ায় ল্যাবে কি পরিমাণ নিষ্ক্রিয় মশা তৈরি করা যায় এবং এই মশাদের প্রজনন ক্ষেত্রে পাঠানোর প্রক্রিয়া কতোটা বাস্তবায়নযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কারণ হলো এক একটি মশার প্রজনন ক্ষেত্রে কোটি কোটি মশার বসবাস। সুতরাং সেখানে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মশা পাঠিয়ে পুরো প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহও রয়েছে।
তবে এই গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে, নিষ্ক্রিয় মশা উত্পাদন করাটা কোনো কষ্টসাধ্য বিষয়ই নয়। ইচ্ছামতো যতো খুশি ততো মশা তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে ল্যাবের। বিপুল পরিমাণ মশা প্রজনন ক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া নিয়ে যে সমস্যার কথা ভাবা হচ্ছে তারও একটা সমাধান করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। এক সঙ্গে প্রচুর সংখ্যক মশা বহনের জন্য তারা বিশেষ এক ধরনের সিরিঞ্জ পদ্ধতি কাজে লাগাতে চান। তারা এই মশাগুলোকে একটি সিরিঞ্জের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে বিশেষভাবে চাপ দিয়ে খুব কম জায়গার মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন।
সম্প্রতি জার্নাল অব ইনসেক্ট সাইন্সে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় যে, খুবই কম জায়গার মধ্যে অনেক সংখ্যক মশা বহন করা সম্ভব। গবেষণায় যুক্ত হয়ে-না চাঙ নামের এক গবেষক জানিয়েছেন যে, এক ঘন সেন্টিমিটার স্থানে ২৪০টি মশা ধারণ করা সম্ভব। এক চা চামচ সম জায়গায় বহন করা সম্ভব অন্তত ১,২০০টি মশা। এক একটি ১০ মিলিমিটার সিরিঞ্জে ১০ হাজার নিষ্ক্রিয় পুরুষ মশা রাখতে তারা সক্ষম হয়েছেন। সিরিঞ্জের মধ্যে মশাগুলোকে ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে খুবই অল্প পরিমাণ জায়গার মধ্যে তাদের আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছিলো। তবে এই প্রক্রিয়ায় মশাদের কম জায়গার মধ্যে নিয়ে আসতে গেলে মশা আবার মারা যাবে কিনা এই নিয়েও ভাবতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের। দেখা গেছে, এই পদ্ধতিতে খুব বেশি একটা মশা মারা যায় না। কিছু মশার পা কিংবা পাখনা ভাঙলেও তা গুরুতর কিছু নয়।
এই সিরিঞ্জের মধ্যে মশাদের দূরের গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা নিয়েও ভাবতে হয়েছে গবেষক দলটিকে। নিষ্ক্রিয় মশা দিয়ে রোগবাহী মশা দমনের জন্য আগামী বছরের মধ্যে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির প্রত্যাশাও করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ ব্যয়বহুল বলে এর সমালোচনাও হচ্ছে বেশ।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।