দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম মাংস তৈরিতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন গবেষকরা। গরুর স্টেম কোষ থেকে এ মাংস তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম মাংস দিয়ে তৈরি করা বার্গারের স্বাদ নিয়েছেন।
আমরা জানি, একটি কোষ বিভাজিত হয়ে একাধিক কোষে রূপান্তরিত হতে পারে। সকল প্রাণীদেহের কোষই বিভাজিত হয়। স্টেম কোষ এমন এক ধরণের কোষ যা অন্য কোষে রূপান্তরিত হতে পারে। রূপান্তরিত হয়ে অনুরূপ আরো কোষ উৎপাদন করতে পারে। স্টেম কোষকে কাজে লাগিয়ে প্রফেসর মার্ক পোস্ট কৃত্রিম মাংসটি তৈরি করেছেন। একটি গরুর স্টেম কোষ থেকে মাংসের ক্ষুদ্র টুকরাগুলোকে ল্যাবরেটরিতে বিশেষভাবে তৈরি করেছেন তিনি এবং তার গবেষক দল। নেদারল্যান্ডসের মাসট্রিচট ইউনিভার্সিটিতে নিরলস পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তিনি এ ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেন।
যাই হোক, এই কৃত্রিম মাংস দিয়ে বানানো বার্গারটি ছিল অনেকেরই আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু। কৃত্রিম মাংসের প্রথম বার্গার হিসাবে এটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। ১৪২ গ্রাম ওজনের বার্গারটি উৎসুক দর্শকদের সামনে খেয়ে পরীক্ষা করে দেখান খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই ভেবেছিলেন, বার্গারটির বিষয়ে হয়তো নেতিবাচক মন্তব্য আসবে। কিন্তু খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতামতে সবাই চমকে উঠেন। এক বিশেষজ্ঞ বলেন, খাদ্য উপাদান সমূহ সঠিক অনুপাতে রাখা হয়েছে বার্গারটিতে। অস্ট্রেলিয়ান খাদ্য বিশেষজ্ঞ হ্যানি রুয়েটজলার বলেন, কৃত্রিম মাংস আরো মসৃণ এবং নরম আশা করছিলাম। তবে এতে চর্বি নেই। তিনি আরো বলেন, কৃত্রিম মাংস এর স্বাদ আসল মাংসের কাছাকাছি হলেও স্বাদটা অতটা মজার নয়। আরেকটু লবণ এবং গোলমরিচ মেশালে হয়তো স্বাদটা আরো বাড়তে পারে।
প্রাণীভক্ত এবং নিরামিষভোজীদের জন্য আবিষ্কারটি ভালো সংবাদ হতে পারে। বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয় বার্গারটি তৈরি করতে। গবেষকরা জানান, তারা এটা দেখাতে চেয়েছেন, খাবার উপযোগি মাংস আমরা তৈরি করতে পারি এবং তা অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব হবে। তারা দাবি করেন, এ মাংস নিরাপদ এবং লাখো মানুষের স্বাভাবিক মাংসের চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।
যদি কৃত্রিম মাংস উৎপাদন করে মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায় তাহলে তো সেটা ভালোই হবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা৷ বিজ্ঞানী পোস্ট আশা করছেন যে, আগামী ২০ বছরের মধ্যে বাণিজ্যিক উপায়ে কৃত্রিম মাংসের উৎপাদন শুরু করা যাবে৷ তবে কৃত্রিম মাংস উদ্ভাবনের ফলে নতুন এক বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। মানুষ প্রাকৃতিক খাদ্য খাবে না সিনথেটিক কৃত্রিম খাদ্য গ্রহণ করবে – এই প্রশ্নে অনেকের মধ্যে বিভক্তি দেখা গেছে। এখন দেখার বিষয় বিতর্ক এবং গবেষণা কোন জায়গায় গিয়ে পৌছে।
তথ্যসূত্র: CNET, TechCrunch