দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হৃদরোগ বা স্ট্রোকের অন্যতম কারণই হলো উচ্চ রক্তচাপ। কোভিড সংক্রমণের পর যাদের পরিস্থিতি হঠাৎ করেই গুরুতর হয়ে উঠছে, তাদের মধ্যে একাংশের আবার আগে থেকেই ছিলো উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। তারা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের কিছু পদ্ধতি জেনে নিন।
যাদের এই সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে, তাদের আরও বেশি করে সাবধান হতে হবে। এই সময় প্রতিদিন রক্তচাপ মেপে দেখুন। যদি রক্তচাপ বেশি থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন। যে সকল নিয়ম পালন করলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে, সেগুলো অনুসরণ করুন।
পুষ্টিকর খাবার খান
প্রোটিনে ভরপুর ডায়ে়টই হলো আপনার জন্য উপযুক্ত। ফল, সব্জি, লো-ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাটও কমাতে হবে। একটা খাবারের রুটিন করে রাখতে পারেন। রোজ কী খাচ্ছেন, কতোটা খাচ্ছেন, এই রুটিনে অর্ন্তভূক্ত রাখুন। কোনও খাবার কেনার সময় ভালো করে পিছনের চিরকুটটা পড়ে নিন। কতোটা ফ্যাট, কতোটা প্রোটিন, কতোটা কার্বোহাইড্রেট রয়েছে সেগুলোও ভালো করে দেখে নিন।
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা যে কোনও রকমের শরীরচর্চা করলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকতে পারে। তাহলে চট করে হাইপারটেনশনও দেখা যাবে না। সাধারণভাবে হাঁটা, সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার খুব ভালো একটি ব্যায়াম। তবে এই লকডাউনে যেহেতু অনেক কিছুই করা করা সম্ভব নয়, তাই বাড়িতে সহজ কিছু কার্ডিয়ো এক্সারসাইজও করতে পারেন। হাই-ইনটেনসিটি ট্রেনিং করতে পারেন বাড়িতে বসে। ইউটিউবে প্রচুর এমন ভিডিও পেয়ে যাবেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন
আপনার বিএমআই’এর মাত্রা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন। আপনার বয়স, উচ্চতা ও আরও কিছু শারীরিক লক্ষণ অনুযায়ী আপনার কতো ওজন থাকা বাঞ্ছনীয়, তা চিকিৎসকই বলে দেবেন। চেষ্টা করুন সেই ওজনটা ধরে রাখতে। খুব বেশি বেড়ে যাচ্ছে মনে হলে ওজন কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
টোকা লবন খাবেন না
প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবন শরীরে কোনো অবস্থাতেই যেতে দেবেন না। শুধু রান্নায় কতোটুকু লবন দিচ্ছেন সেটা দেখলেই হবে না, বাজার থেকে যদি কোনও তৈরি করা খাবার কিনে আনেন, তাতে কতোটা লবন রয়েছে, সেটিও দেখা প্রয়োজন। তাই কোনও কিছু কেনার আগে প্যাকেটের পিছনে লেখা চিরকুট মনোযোগ সহকারে পড়ুন। প্রসেস্ড ফুড না খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। যে কোনও বাজার থেকে কেনা চটজলদি খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবন থাকে, তাই সেগুলোর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
উদ্বেগহীন থাকুন
সব সময় উদ্বেগহীন থাকার চেষ্টা করতে হবে। নিজের মনকে শান্ত রাখাটা খুব প্রয়োজন। নিয়ম করে নিঃশ্বাসের ব্যায়াম ও মেডিটেশন করুন। যেসব খবর পড়লে উদ্বেগ বেড়ে যায়, সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। নিজের আশা-প্রত্যাশাগুলি বাস্তবিক করতে হবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।