দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনগণের ‘ঘাড়ে পাড়া’ দিয়ে কথাটি শুনতে খারাপ লাগলেও পরিবহন মালিকরা তাই করেছেন। তারা বর্ধিত তেলের দাম প্রত্যাহারের দাবি করেননি। তারা ভাড়া বাড়ানোর জন্যই বাস বন্ধ করেছিলেন। অর্থাৎ আবারও সেই জনগণকে বলির পাঁঠা করা হলো।
যেদিন তেলের দাম বাড়ানো হলো সেদিনই ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন মালিকরা। তারা এদেশেই বসবাস করেন এবং তারা এদেশেরই নাগরিক। তেলের দাম বাড়লে গাড়ির খরচ বাড়বে সেটিই স্বাভাবিক। কিন্তু ভাড়া বাড়লে এদেশের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বাসে সাধারণ মানুষই চলাচল করেন। তাদের অবস্থা কি হবে তা কিন্তু বাস মালিকরা একবারও ভাবেননি। তারা যদি তা ভাবতেন তাহলে তারা তারা বর্ধিত তেলের দাম প্রত্যাহারের দাবি জানাতেন। কিন্তু তা করেননি। ভাড়া বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।
একবার ভাবুন আমরা কোন দেশে বসবাস করছি। আমাদের পাশের দেশের কথা একবার চিন্তা করুন। যেদিন আমাদের তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে সেদিনই তারা ডিজেল এমনকি ভোজ্য তেলের দামও কমিয়েছে। আমাদের দেশের জনগণ কী কখনও ভাবতে পারেন কোনো কিছুর দাম কমানো হবে!
যেদিন ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো সরকার সেদিনই ঘোষণা করলো ৭ তারিখে বসে গাড়ির ভাড়া পুন:নির্ধারণ করা হবে। কিন্তু বাস মালিকরা ওই দুই দিনও সহ্য করতে পারলেন না। তারাতো বলতে পারতেন ৭ তারিখে ভাড়া সঠিকভাবে নির্ধারণ করা না হলে আমরা ৮ তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট করবো। কিন্তু তারা তা করেননি। জনগণকে জিম্মি করে তারা ভাড়া বাড়ানোর জন্য ধর্মঘটের ডাক দিলেন। তাও আবার অলিখিত ধর্মঘট! ফোনে ফোনে মালিকদের জানালেন গাড়ি বের না করতে! আমরা এ কোন দেশে বসবাস করছি।
আবার আমাদের সরকারও এক্ষেত্রে কম যান না। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের অবস্থা এমনিতেও ভালো নয়। অনেকের চাকরি গেছে। বহু প্রতিষ্ঠান করোনাার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেই ধাক্কা জনগণ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অথচ এই মুহূর্তে তেলের দাম বাড়ানোর দরকার পড়লো! আবার যদি বাড়ানোও হয় তবে খুব সামান্য বাড়ালে হয়তো এমন পরিস্থিতি হতো না। তাছাড়া সরকার তেলের দাম বাড়ানোর আগেই মালিকদের সঙ্গে বসা উচিত ছিলো। কিংবা তাদের বলা উচিত ছিলো তোমরা ধর্মঘটে যেয়ো না আমরা ভাড়া বাড়াবো। তাছাড়া যেদিন তেলের দাম বাড়ানো হলো তারপরের দিন অর্থাৎ শুক্রবারেই বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত ছিলো। কারণ হলো আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে শুক্রবার আদালত বসানো বা মন্ত্রীদের জরুরি বৈঠকের। তাহলে শুক্রবার বসে এই সিদ্ধান্ত নিলে জনগণকে এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না।
পরিবহণ সেক্টরে যে ধরনের নৈরাজ্য চলছে তা রোধ করা দরকার। রাজধানী ঢাকাতে বাসভাড়া নেওয়া হয় ইচ্ছা স্বাধীন মতো। সিটিং সার্ভিসের নামে জনগণের কাছ থেকে ইচ্ছা মতো ভাড়া আদায় করা হয়। এয়ারপোর্ট থেকে মিরপুর হয়ে চলাচলকারী গাড়িগুলোতে এই নৈরাজ্য বেশি। এয়ারপোর্ট থেকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বাসের ভাড়া ৩০ টাকা। অথচ এয়ারপোর্ট থেকে কেও যদি ক্যান্টনমেন্ট ফ্লাইওয়ার পার হয়ে ইসিবি চত্তর নামেন তাকেও দিতে হয় ওই ৩০ টাকা। অথচ মূল ভাড়ার থেকে অর্ধেকও দূরত্ব নয় এই স্টপেজটির!
আজকে যে বাস ভাড়া বাড়লো তাতে শুধু পরিবহণ খাতে জনগণকে বেশি দিতে হবে তা নয়, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ সব দিকেই এর প্রভাব পড়বে। এর মাশুন জনগণকেই দিতে হবে। সরকারেরও কিছু আসবে যাবে না এবং বাস মালিকদেরও আসবে যাবে না। কারণ তারাতো ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়িয়ে আরও অধিক মুনাফা করার সুযোগ পেয়েছেন। তাই তারা বোগল বাজাবেন সেটিই স্বাভাবিক।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।