দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ ফেসবুক জানিয়েছে বাংলাদেশ তাদের কাছে ১২ জন বাংলাদেশী ফেসবুক ব্যাবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চেয়েছে। তবে ফেসবুক এসব ব্যক্তির বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে কোন তথ্য প্রদান করেনি।
গত মঙ্গলবার ফেসবুক তাদের এক প্রতিবেদনে জানায় সারা বিশ্বের অনেক সরকার ফেসবুকে তাদের দেশের জনগণের উপর বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারি চালাতে যেয়ে ফেসবুকের কাছে ঐসব ব্যক্তির বিষয়ে গোপন তথ্য চেয়ে আবেদন করে। তথ্য চেয়ে আবেদনকারী প্রায় ৭৪ টি দেশের মাঝে বাংলাদেশ সরকারও রয়েছে বলে জানায় ফেসবুক। ফেসবুক তাদের তথ্য বিবরণীতে জানায় বাংলাদেশ তাদের নিকট ১২জন ফেসবুক ব্যবহারকারীর বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। তবে ফেসবুক বাংলাদেশ সরকারকে এসব ব্যক্তির বিষয়ে কোন তথ্য দেয়নি।
‘গ্লোবাল গভর্নমেন্ট রিকোয়েস্টস রিপোর্ট’ নামে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশ একসাথে চলতি বছরের শুরুতে প্রায় ১২ জন ফেসবুক ব্যবহারকারীর বিষয়ে তথ্য চেয়ে আবেদন করে। তবে কেন এবং কি তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার সে বিষয়ে ফেসবুক কিছুই উল্লেখ করেনি।
ফেসবুকের এই প্রতিবেদনে দেখা যায় নিজ দেশের সন্দেহভাজন জনগণের বিষয়ে তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ছাড়াও আবেদন করা দেশ সমূহের মাঝে সবচেয়ে বেশী আবেদন করেছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। ফেসবুক জানিয়েছে তাঁরা ব্যবহারকারীদের নিকট স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতি ৬ মাস পর পর ‘গ্লোবাল গভর্নমেন্ট রিকোয়েস্টস রিপোর্ট’ নামে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
ফেসবুকের নিকট বাংলাদেশ সরকারের কেন তথ্য চেয়ে এই আবেদনঃ
এ বছর যুদ্ধ অপরাধী হিসেবে কাদের মোল্লার রায় ঘোষণার পর সারাদেশে সেই বিচার না মেনে ফাঁসির দাবিতে শুরু হয় গণজাগরণ মঞ্চ নামে আন্দোলন। সে আন্দোলন চলাকালেই আন্দলনের সাথে সম্পৃক্ত এক কর্মী স্থপতি রাজীব হায়দারকে দুর্বৃত্তরা চাপাতি দিয়ে হত্যা করলে গণজাগরণ মঞ্চ এবং এর বিপক্ষে অবস্থান নেয়া পক্ষ বিপক্ষের সমর্থকরা একে অপরের বিষয়ে নানান হুমকি দিতে থাকে। ফারাবি নামের চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিদ্যা বিভাগের একজন ছাত্র তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে সরাসরি লিখে যে ইমাম রাজীব হায়দারের জানাজা পড়িয়েছেন তাকে হত্যা করা ইমানি দায়িত্ব। এছাড়া সেই সময় নাস্তিক আস্তিক ইস্যু নিয়েও দেশ রাজনীতি পাশাপাশি বাংলাদেশী ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মাঝে একে অপরকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি আশংকা জনক হারে বেড়ে যায়। একই সময় যুদ্ধ অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আরেক আসামী আল্লামা দেলোয়ার হসেনের রায় প্রদান সহ নানান ইস্যুতে জামাত শিবির দেশ জুড়ে হতাল নৈরাজ্য চালায় এবং বাঁশের কেল্লা নামক এক ফেসবুক পেইজের নামে অভিযোগ উঠে তাঁরা প্রকাশ্যে দেশে অরাজকতা এবং পুলিশ হত্যার নির্দেশ সহ ট্রেন লাইন উপড়ে ফেলার বিষয়ে ঐ পেজের অনুসারীদের উদ্বুদ্ধ করছিল।
এছাড়াও নাস্তিক ইস্যু নিয়েও রাজনিতিক অঙ্গন উত্তপ্ত ছিল সেসময়। অনেকেই অভিযোগ করেন মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল(সাঃ) নিয়ে কিছু সংখ্যক ব্লগার এবং ফেসবুক ব্যবহারকারী বাজে মন্তব্য এবং কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছেন।
একই সময় চট্রগ্রামের রামুতে দুইজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর ইসলাম বিরোধী ছবিতে ট্যাগ হওয়া নিয়ে সৃষ্টি হয় ধর্মীয় সংঘাত সে সময় রামুর বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস করে দেয় দুর্বৃত্তরা।
ফলে ঐ সমসাময়িক সময়ে বাংলাদেশ সরকার ফেসবুক ব্যবহারকারীদের উপর কড়া নজর রাখছেন বলেও বার্তা সংস্থারা সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় ও সররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্রিতি দিয়ে সংবাদ পরিবেষণ করেছিলেন। বাংলাদেশ সরকার সেই সময় এই ১২ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে থাকতে পারেন।