দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তচাপের সমস্যা ডেকে আনতে পারে হৃদরোগ বা স্ট্রোক। বিশেষ করে পরিবারে যদি এই সমস্যার ইতিহাস যদি থাকে, তাহলে অতিরিক্ত সতর্কতা নিতে হবে। বিষয়টি জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রক্তচাপের সমস্যা ডেকে আনতে পারে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক। বিশেষ করে পরিবারের কারও যদি এই সমস্যার ইতিহাস থাকে, তবে অতিরিক্ত সতর্কতা নিতে হবে, মনে করিয়েছেন কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক শুভদীপ রক্ষিত।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কি বংশানুক্রমিক?
এই বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে চিকিৎসক জানিয়েছেন, কিছু ক্ষেত্রে পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও সঞ্চারিত হতে পারে এই রোগ। মূলত দু’ভাবে ঘটে এই বিষয়টি। কিছু বিরল ক্ষেত্রে সরাসরি বাবা-মায়ের থেকে সন্তানের দেহে সঞ্চারিত হতে পারে এই রোগ। এই বিষয়টি মূলত জিনগত। তবে বহু ক্ষেত্রে পরোক্ষভাবেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে বিষয়গুলো সচরাচর সমস্যা তৈরি করে, সেগুলোকে ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ বলা হয়। বাবা-মায়ের থাকলে স্থূলতা, থাইরয়েড বা হৃদযন্ত্রের সমস্যার মতো রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো বিপদ ডেকে আনতে পারে সন্তানদের ক্ষেত্রেও। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের বাবা-মায়ের মধ্যে এই রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো দেখা যায়, তাদের সন্তানদের দেহেও এই বিষয়গুলো দেখা দেয়।
তাহলে কী করণীয়?
যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকেই, তাহলে কী করতে হবে সন্তানকে? এই প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক শুভদীপ রক্ষিত বলেছেন, “অল্প বয়সেই যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ধরা পড়ে থাকে, তাহলে সন্তানকে ইসিজি, ইকো, লিপিড প্রোফাইল, থাইরয়েড এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষা করিয়ে দেখে নেওয়া যেতে পারে।” এই সম্পর্কে চিকিৎসক ‘হাইপারট্রফিক কার্ডিয়ো মায়োপ্যাথি’ নামে একটি সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। “এই রোগে হৃদপেশি এবং রক্ত প্রবাহের সমস্যা দেখা যায়, যে কারণে বেড়ে যায় রক্তচাপ। যাদের এই সমস্যা বিদ্যমান, তাদের সন্তানকে অবশ্যই ইকো পরীক্ষা করিয়ে দেখে নেওয়া দরকার বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসরা।
কখন পরীক্ষা করতে হবে?
এক বার সমস্যা দেখা দিলেই শুধু শুধু অপেক্ষা করে কোনোই লাভ নেই। যদি অল্প বয়সি দম্পতির এহেন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে, তাহলে সন্তান ছোট হলেও পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে কিছু ক্ষেত্রে ৫ বছর অন্তর পর্যবেক্ষণেও থাকতে হবে। তাছাড়াও যাদের বংশে হৃদরোগ, স্ট্রোক বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বিদ্যমান, তাদের বয়স ৪০-৪৫ ছুঁলেই রক্তচাপের পরীক্ষা করাতে হবে। বর্তমানে চাইলে বাড়িতেও রক্তচাপ মাপার যন্ত্র পাওয়া যায়। তাই অবহেলা না করাই ভালো।
জীবনযাত্রায় কিছু বদল আনতে হবে
যাদের রক্তচাপের সমস্যা বিদ্যমান, তাদের জীবনযাত্রায় কিছু বদল আনায় জোর দেন চিকিৎসকরা। খাওয়ার লবণে লাগাম টানতে হবে, সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ৩০ মিনিট করে শরীরচর্চা করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার দিকে নজর দিতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বাড়িতে যদি উচ্চ রক্তচাপের থেকে তৈরি হওয়া কোনও সমস্যা থেকে মৃত্যুর ইতিহাস থাকেই, তবে মাথা ঘোরানো, মাথাব্যথা, বুকে চাপ লাগার সমস্যাকে মোটেও অবহেলা করতে নিষেধ করেছেন চিকিৎসক। তবে সতর্ক থাকা মানেই আতঙ্কে থাকা নয়, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকর। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।