দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, বিশ্ব জুড়ে প্রতিবছর প্রায় ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত নানা জটিলতার কারণে মৃত্যু ঘটছে। ভালো থাকতে গেলে শুধু ওষুধই নয়, জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তনও আনাটা জরুরি।
মূলত উচ্চ রক্তচাপ হানা দেয় নিঃশব্দ ঘাতকের মতোই। অথচ দৈনন্দিন অনেক কাজের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এই সমস্যার বীজ। এই বিষয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, বিশ্ব জুড়ে প্রতিবছর প্রায় ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত নানা জটিলতার কারণে মৃত্যু ঘটছে। হয়তো অনেকেই জানেন, রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে রক্তচাপে হেরফেরও হয়। আবার অনেকের ধারণা যে, দৈনিক ভাতঘুমের অভ্যাস নাকি বাড়িয়ে দিতে পারে এই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। ডেকে আনতে পারে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের মতো অসুখ। তাছাড়াও কোন কোন অভ্যাসে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে?
অস্বাস্থ্যকর খাবার
রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণই হলো, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া। অতিরিক্ত লবণ-চিনি দেওয়া প্যাকেটজাত খাবার, প্রক্রিয়াজাত ভাজা খাবার নিয়মিত খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে।
শরীরচর্চা
শরীরচর্চার অভাবেও অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বেড়ে যায়। আপনার সময়ের যদি অভাব থাকে, সেই ক্ষেত্রে নিয়মিত হাঁটাহাটি করলেও খানিকটা উপকার পেতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিকভাবে সক্রিয়দের হার্টের স্বাস্থ্য শরীরচর্চায় অনভ্যস্তদের তুলনায় অনেকটা ভালো।
তামাকজাত দ্রব্য
শুধু ধূমপানই নয়, তামাকজাত যে কোনও দ্রব্যের ব্যবহারও শরীরের জন্যে ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্ত দ্রব্য শরীরে প্রবেশ করলে তা রক্তবাহিকাগুলোর পথ সরু করে দেয়। যে কারণে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়।
মানসিক চাপ
ঘরে-বাইরে কাজের চাপ কিংবা উদ্বেগ যদি মনের উপর প্রভাব ফেলে, সেই ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বেড়েও যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রতিটি মানুষকেই নিয়মিত ধ্যান, যোগচর্চা করা অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org