দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীর ও ত্বক যত্নে রাখতে হলে নিয়ম করে তেঁতুল খান। কারণ স্বাস্থ্যের যত্ন নিতেও তেঁতুল সমান পারদর্শী। প্রতিদিন যদি অল্প হলেও তেঁতুল খাওয়া যায়, তাহলে বেশ সুফল পেতে পারেন।
আপনি ফুচকা খেতে গিয়ে যদি দেখেন যে, তেঁতুল পানি শেষ, তাহলে মজটাই মাটি হয়ে যাবে। তেঁতুলের মাহাত্ম্য কিন্তু এমনই। পাপড়ি চাট বা ভেলপুরি- উপর থেকে একটু তেঁতুলগোলা পানি ছড়িয়ে দিলে মন যেনো ভরে যায়। বাসন পরিষ্কার করা থেকে ঘরোয়া অনেক কাজে বাঙালি বাড়িতে তেঁতুলের ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে তেঁতুলের ভূমিকা এখানেই শেষ নয়। স্বাস্থ্যের যত্ন নিতেও তেঁতুল সমানভাবে পারদর্শী। প্রতিদিন যদি অল্প করেও তেঁতুল খাওয়া যায়, তাহলে কী কী সুফল পেতে পারেন তা কী আপনি জানেন?
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
তেঁতুলে থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান পরোক্ষ উপায়ে রক্তের শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তেঁতুলে উপস্থিত উৎসেচক শরীরে শর্করার শোষণ মাত্রা আরও কমিয়ে দিয়ে শর্করার নিয়ন্ত্রণ করে। যে কারণে ডায়াবেটিক রোগীরা যদি ওষুধের পাশাপাশি নিয়ম করে তেঁতুল খান, তাহলে সুস্থ থাকতে পারবেন।
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে তেঁতুল
তেঁতুল রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তেঁতুলের জুড়ি নেই। কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভোগা রোগীদের নিয়ম করে তেঁতুল খাওয়াটা জরুরি। হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এই ফলটি দারুণ উপকারী। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমায় এই তেঁতুল।
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
ঋতু পরিবর্তনের সময়ে ঠাণ্ডা লাগা ও সর্দিকাশি থেকে রেহাই পেতে গরম পানিতে তেঁতুল ও গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে দারুণ উপকার পাবেন। তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। যেগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে তেঁতুল
তেঁতুলে রয়েছে হাইড্রক্সিসাইট্রিক অ্যাসিড, যা কখনও শরীরে চর্বি জমতে দেয় না। এই অ্যাসিড সেরোটোনিন নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রা বাড়িয়ে খিদে কমিয়ে দেয়। খাবারের পরিমাণে রাশ টানলেও ওজন বাড়বে না। এই ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় তেঁতুলের শরবত রাখতেই পারেন।
চুল ও ত্বকের যত্নে তেুঁতুল
চুল থেকে ত্বক- নিয়ম করে তেঁতুল খেলে পৃথক করে প্রসাধনী ব্যবহার না করলেও চলবে। এই তেঁতুলে রয়েছে ভিটামিন সি, এই ভিটামিন ত্বক ভিতর থেকে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। কোনও সমস্যা ত্বকের কাছে ঘেঁষতেই দেয় না। একইভাবে, চুলের যত্নেও তেঁতুলের ভূমিকা এক অপরিসীম। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org