মামুন আতিক ॥ বর্তমানে এই অত্যন্ত দ্রুত-গতির ও কানেক্টেড বিশ্বে, প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানই ডিজিটাল যুগের কারণে দারুন কিছু চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের মুখোমুখি হচ্ছে। নতুন এই ল্যান্ডস্কেপে টিকে থাকার জন্য ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সফল ব্যবসায়িক উন্নয়নের জন্য ইনোভেটিভ কৌশল গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
প্রযুক্তির ব্যবহার, ডেটা-নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও স্ট্রেটেজিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর এই তুমুল প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব।
মূল কৌশল হলো ডিজিটাল টুলস এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের শক্তি ব্যবহার করা। ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর এবং তাদের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য অভূতপূর্ব সুযোগ প্রদান করে। সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (SEO), কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন এবং বর্তমান সময়ের ক্রেজ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন ও কন্টেন্ট স্পন্সরশিপের মতো ডিজিটাল মার্কেটিং এর কৌশলগুলো গ্রহণ করে লিডিং ব্যবসাগুলো তাদের প্রচার ও প্রসার বাড়াতে, ব্র্যান্ড সচেতনতা তৈরি করতে ও নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে দারুণভাবে সক্ষম হচ্ছে।
ডেটা-নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ সফল ব্যবসা উন্নয়নের আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। গ্রাহকের ডেটা বিশ্লেষণ এবং সেটার সঠিক ব্যাখ্যা করে, সংস্থাগুলো ভোক্তাদের আচরণ, পছন্দ ও বাজারের ট্রেন্ড সম্পর্কে এক অমূল্য জ্ঞান অর্জন করতে পারে। এই ডেটা-নির্ভর পদ্ধতি প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে টার্গেটেড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন, প্রত্যেক গ্রাহকের জন্য সম্পূর্ণ পারসোনালাইজড অভিজ্ঞতা ও ইনফরমড ডিসিশন নেওয়ার সুযোগ দেয়।
বর্তমানে এই ডিজিটাল যুগে স্ট্রেটেজিক পার্টনারশিপ তৈরি করা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরিপূরক ব্যবসা ও সমসাময়িক ইন্ডাস্ট্রি লিডারদের সাথে সহযোগিতা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন নতুন বাজার, প্রযুক্তি ও রিসোর্স আনলক করতে সাহায্য করছে। স্ট্রেটেজিক পার্টনারশিপ একটি কোম্পানির প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা বাড়ানোর সাথে সাথে, উভয়পক্ষের গ্রাহকসংখ্যা প্রসারিত করতে এবং উভয়পক্ষকে নতুন নতুন ইনোভেশনের মাধ্যমে আরও বেশি ভ্যালু এডিশন করতে সু্যোগ করে দেয়।
এছাড়াও টেকসই ব্যবসায়িক উন্নয়নের জন্য উদ্ভাবনকে সাদরে গ্রহণ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উদ্ভাবনের সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করা সৃজনশীল চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধান ও নতুন পণ্য বা সার্ভিসের বিকাশকে উৎসাহিত করে। নতুন ও সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রযুক্তি গ্রহণ করা এবং ইন্ডাস্ট্রি ট্রেন্ড সম্পর্কে আপডেটেড থাকা ব্যবসাগুলোকে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রি লিডার হয়ে উঠতে সবথেকে বেশি সাহায্য করে।
ডিজিটাল এই যুগে সফল ব্যবসায়িক বিকাশের জন্য একটি বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন। ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে, ডেটা-নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, স্ট্রেটেজিক পার্টনারশিপ গঠন করে ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করেই কেবলমাত্র ব্যবসাগুলো প্রতিযোগিতামূলক বাজারে উন্নতি করতে পারে। টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ও ইন্ডাস্ট্রি লিডিং পজিশনে অবস্থান করতে প্রতিষ্ঠানগুলিকে অবশ্যই ডিজিটাল যুগের সমস্ত সুযোগগুলোকেই সঠিকভাবে ও সময়মতো আলিঙ্গন করতে হবে।
# লেখক: মামুন আতিক
চিফ অফ বিজনেস ডেভেলপমেন্টে এন্ড পার্টনারশিপ, বঙ্গ
www.bongobd.com
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়-
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।